একজন স্বপন কুমার গুহ
অভিজিত রাহুল বেপারী, পিরোজপুর : পিরোজপুর শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে দামোদর খালের পাশেই দামোদর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অটোরিক্সা স্ট্যান্ডের পাশে ছোট্ট একটি হোটেল। মালিক স্বপন কুমার গুহের বাড়ি পিরোজপুর সদরের পুলিশ লাইন এলাকায়। পরিবারে তার স্ত্রী ছাড়া সদস্য বলতে তেমন কেউ আর নেই। একটি ছোট চায়ের দোকান থেকে তিল তিল পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে হোটেলটি।
স্বপন গুহের হোটেলটি যতটা না বড় তার থেকে হাজার গুনে বড় তার মন, তার বিবেক। পিরোজপুর সদরে বেশ কিছু বসতবাড়ি-হীন উদ্বাস্তু মানুষ আছে। সকলের মুখে তারা পাগল নামে পরিচিত। এদের মধ্যে পরিচিত মুখ দুটি হল শাবনুর পাগলি এবং নমিতা পাগলি। তাদের কোনো কাজ নেই, বসতবাড়ি নেই তাই গোটা পিরোজপুরই হল তাদের বাড়ি।
পাগল বলে রোজ দুবেলা দু’মুঠো ভাতের জন্য তাদের ভিক্ষা করতে হত একসময়। তবে স্বপন কুমার গুহের হোটেলটি খুঁজে পাওয়ার পর তাদের তার ভাতের চিন্তা করতে হয়না। রোজ ৩ বেলা বিনামূল্যে স্বপন গুহের হোটেলে পেট পুরে ভাত-মাছ খায় তার হোটেলে।
স্বপন গুহ বলেন, ‘ওদের তো কেউ নেই। কোথায় খায় কি করে! ওরা যদি ঠিক দুপুরবেলা এসে বলে যে বাবু আমাকে দুইটা ভাত দেবেন তখন কি কেউ পারে তাদের ফিরিয়ে দিতে? বাবা, ওই সময় আমার মাথায় আর কিছু আসে না।সমাজের এই অবহেলিতদের জন্য কেউ তো আর কিছু করেনা। ওরা আসলে আমার কর্মচারীদের বলি ওদের পেট পুরে ভাত আর মাছ দিতে।’
ঠিক এভাবেই স্বপন কুমার গুহ দ্বীর্ঘদিন ধরে এদের খাইয়ে আসছেন। যুগ যুগ ধরে স্বপন কুমার গুহের মত মানুষদের জন্যই এসকল অসহায় মানুষগুলো বেচে আছে।
(এআরবি/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০১৭)