নওগাঁয় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁয় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং অবিরাম বর্ষণে জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে ৯টি উপজেলার মানুষ এখন বন্যা কবলিত। রানীনগর, মান্দা ও আত্রাই উপজেলার ১৫টি স্থানে, আত্রাই ও ছোট যমুনার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
জেলা সদরের সঙ্গে আত্রাই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে নওগাঁর ৯টি উপজেলার এক লাখ হেক্টর বিঘার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে এবং কয়েক হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় ৩ লক্ষাধিক লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২১৪ এবং ছোট যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ অফিস বলছে, এ পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলার ৫৮টি ইউনিয়নের ২৭০টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। বন্যায় প্রায় ২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে ৯শ ৬০টি এবং আংশিক ভাবে বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজার ৬শ ৪টি। বন্যা কবলিত এলাকার অসহায় পরিবারগুলো বাঁধে, স্কুলে ও উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত অধিকাংশ বন্যার্তদের কাছে সরকারি সাহায্য বা কোনাে ত্রাণ না পৌঁছানোয় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।
অপরদিকে নতুন করে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় নওগাঁ সদর উপজেলার ইকরতাড়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ পাউবো বাঁধ ভেঙে গেছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় নতুন ভাঙার স্থানটি স্থানীয় লোকজন, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, বাঁশ, কাঠ ও বালুর বস্তা দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। বাঁধটি ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা অবলম্বনে মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি। নদীর পানির চাপ বেশি থাকায় নতুন করে বাঁধ ভেঙে গেছে। নতুন ভাঙার স্থানটি প্রশাসনের সহযোগিতায় স্থানীয় লোকজন রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। আশা করছেন ভাঙন কবলিত স্থানটি রক্ষা করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত ৩৩ মেট্রিক টন চাল এবং ৫২ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। জেলায় খাদ্য মজুদ আছে প্রায় সাড়ে ৭৪ মেট্রিক টন আর নগদ টাকা মজুদ আছে ৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। প্রয়োজনীয় চাহিদা সরকারের নিকট দাখিল করা হয়েছে।
(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৭, ২০১৭)