গৌরীপুরে শিক্ষক দিগম্বরের ঘটনায় মানববন্ধন ও হরতালের ডাক
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুরের উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মুমিনুন্নিসা মহিলা অনার্স কলেজের ইসলামি ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদকে দিগম্বর করার ঘটনার বিচারের দাবিতে সোমবার ২৩ জুন এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মানব বন্ধন, প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করে।
সোমবার দুপুরে গৌরীপুর সরকারী কলেজের সামনে মানব বন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল গৌরীপুর শহর প্রদক্ষিণ শেষে ধান মহাল চত্তরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
বিক্ষোভ মিছিলটি কলেজরোড মোড়ে আসলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পুলিশের ব্যারিকেট ভেঙ্গে বিক্ষোভকারীরা শহরের দফায় দফায় মিছিল করে।
পরে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে মঙ্গলবার গৌরীপুর উপজেলায় অর্ধদিবস হরতালের ঘোষণা দেয়া হয়।
পৃথক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ রুহুল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আলী আহম্মদ পাঠান সেলভী, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ, পৌরকাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন খান, আব্দুল কাদির, দুলাল ফকির, ইকরাম হোসেন খান মামুন, যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন, আব্দুর রউফ মোস্তাকিম, সাবেক ভিপি মাহবুবুর রহমান শাহীন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদ ২২ জুন রবিবার তার কর্মস্থল থেকে মোটরসাইকেল যোগে গৌরীপুর তার নিজ বাড়ী ফেরার পথে বিকাল ৪ টায় কলতাপাড়া তাল্লু স্পিনিং মিলের সামনে থেকে ডৌহাখলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মো. শহিদুল্লাহ, একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের কর্মী সাবেক ই্উপি সদস্য আকরামের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন এমপির সমর্থক পথরোধ করে। সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্য প্রতি মন্ত্রী ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকিরের সমালোচনা করায় তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দিগম্বর করে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক দিয়ে টেনে হেচড়ে কলতাপাড়া এমপির ব্যত্তিগত কার্যালয় (সেবালয়) নিয়ে যায়। সেবালয়ে প্রায় ঘন্টা খানেক আটকে রেখে নির্যাতন চালানোর পর বিবস্ত্র অবস্থায় ছেড়ে দেয়। পরে তিনি তার রেইন কোর্ট গায়ে জড়িয়ে বাড়ি ফিরে।
ফরিদ উদ্দিন বলেন, তিনি এক সময় গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, চাকুরি সরকারি হওয়ার পর পদ থেকে অব্যহতি নেন। ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে ক্যাপ্টেন মুজিব পুনরায় জয়ী হওয়ার পর থেকে তার সমর্থকরা এলাকায় নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে। তার প্রতিবাদ করায় এমপি তার উপর ক্ষুদ্ধ হয়েছে বলে তিনি জানতেন। অভিযুক্ত শহিদুল ইসাম বলেন, ফরিদ উদ্দিন বিভিন্ন সময় এমপিকে উলঙ্গ করার কথা বলতো তাই দলিয় লোক জন তাকে জামা কাপড় খোলার চেষ্টা করছিল। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে রক্ষা করি আর এ ব্যাপারে এম পি‘র কোন ইন্ধন নেই। এ নিয়ে শহরে থমথমে অবস্থ বিরাজ করছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ ঘটতে পারে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গৌরীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আলী জানান, এই ঘটনায় ফরিদ উদ্দিন বাদী হয়ে শহীদুল ইসলাম ও আকরাম মেম্বারে নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩০/৪০জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে। গৌরীপুর থানার মামলা নং ১৯।
(এসইএম/এএস/জুন ২৩, ২০১৪)