বাগেরহাট প্রতিনিধি : মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিলগ্নে ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ সকালে বাগেরহাটে তৎকালিন মহাকুমা প্রশাসকের অফিস ভবনের ছাদে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করা হয়। বাগেরহাটের ভাসানীখ্যাত আওয়ামী লীগের তৃর্ণমুলের নেতা এস এম শফিক ভন্টুমিয়া ১৯৭১ সালের ১ মার্চ সকালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাঁর ধানমন্ডির ৩২ নম্বার বাসা থেকে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার নক্সা নিয়ে চলে আসেন নিজ শহরে।

পতাকার জন্য লাল- সবুজ কাপড় কিনে ২ মার্চ মধ্যরাতে কাজী নজরুল ইসলাম রোডের আনসার দর্জ্জিকে দিয়ে এস এম শফিক ভন্টুমিয়া বানিয়ে ফেলেন নতুন পতাকা। পরদিন সকালে আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় ও প্রদেশিক পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চিত্ত নামের এক কিশোর ওই পতাকাটি উত্তোলন করে মহাকুমা প্রশাসকের (এসডিও) অফিস ভবনের ছাদে।

বাগেরহাটে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনের অপরাধে হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রথমে শহরে এসেই গুলি করে হত্যা করে কিশোর চিত্তকে। আর এরআগেই মুক্তি বাহিনীর জন্য যুবকদের সংগঠিত করতে ও মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে স্বপরিবারে শহর ছেড়ে চলে যান এস এম শফিক ভন্টুমিয়া।

বর্তমান বাগেরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালিন খুলনা বিভাগীয় মুজিব বাহিনীর প্রধান শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে প্রথমে শিরোমনিতে খুলনা বেতার কেন্দ্র দখলের যুদ্ধে অংশ নেন ভন্টুমিয়া। বাগেরহাটে ৬৯ গন আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু ৬ দফা, মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করাসহ নিজে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া নিলোর্ভ ভন্টুমিয়া এবছরের ৭ জানুয়ারি মৃত্যু বরন করেন। ভন্টুমিয়া মুক্তিযুদ্ধার তালিকায় নাম অন্তরভূক্তর জন্য মন্ত্রনালয়ে আবেদন করলেও আজও সরকারি গেজেটে তার নামটি অন্তরভূক্তি হয়নি।

এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শরিফ নজরুল ইসলাম জানান, এস এম শফিক ভন্টুমিয়া’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার বিষয়টি সঠিক বলে উঠে এসেছে উপজেলা যাচাই- বাছাই কমিটির রির্পোট। তা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে গেজেট প্রকাশ এখন বাকি রয়েছে মাত্র।

(একে/এএস/মার্চ ০৩, ২০১৭)