হাইকোর্টে শুনানি কালেই প্রবীরের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ, অপেক্ষা নতুন বেঞ্চের
স্টাফ রিপোর্টার : সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের পক্ষে হাইকোর্টে দাখিল করা একটি আবেদনের শুনানি আজ শুরু হলেও শেষ হয়নি। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ শুনানি চলাকালেই সেটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন এবং অপর কোনও বেঞ্চে ফের শুনানির অনুমতি দেন।
প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে চলমান ৫৭ ধারার মামলার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ এ ধারায় হাইকোর্টে কোয়াশমেণ্টের আবেদন করেছিলেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা। ৫৯ নম্বর সিরিয়ালের ওই আবেদনটি উপস্থাপিত হয়েছিল আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মুহাম্মাদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি আতাউর রহমান খানের বেঞ্চে। প্রবীর সিকদারের পক্ষে ওই আবেদনের শুনানিও শুরু করেছিলেন এডভোকেট ইদ্রিসুর রহমান। তাঁকে সহযোগিতা করছিলেন এডভোকেট সামিউল সরকার। প্রায় ৩০ মিনিট শুনানির পর আদালত হটাত করেই অব্যাহত শুনানির ছেদ টেনে ওই আবেদনটি ওই বেঞ্চের কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন এবং হাইকোর্টের অপর কোনো বেঞ্চে স্থানান্তরের অনুমতি দেন। প্রবীর সিকদারের পক্ষের আইনজীবীরা কাল বুধবার হাইকোর্টের নতুন কোনো বেঞ্চে কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন জানাবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট বিকেলে নিজের নিরাপত্তার কথা বলে ঢাকার ইন্দিরা রোডের নিজের পত্রিকা দৈনিক বাংলা ৭১ অফিস থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। পরে ফরিদপুরের কোতোয়ালী থানায় এলজিআরডি মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের মানহানির অভিযোগ এনে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন সরকারী উকিল স্বপন পাল। ওই দিনই গভীর রাতে ওই মামলার সূত্রে ডিবি পুলিশ প্রবীর সিকদারকে তুলে দেয় ফরিদপুরের কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে। থানায় পুলিশি নির্যাতন শেষে ১৭ আগস্ট সন্ধ্যায় তাঁকে হাজির করা হয় ফরিদপুরের আদালতে। আদালতে একজন আইনজীবীকেও তার পক্ষে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। আদালত তাঁকে ফরিদপুর জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
পরদিন ১৮ আগস্ট একই আদালতে পুলিশ সাংবাদিক প্রবীরের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে মঞ্জুর করা হয় ৩ দিনের রিমান্ড। ওই দিন আবার তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। দেশে বিদেশে অব্যাহত তীব্র প্রতিবাদের মুখে পরদিন ১৯ আগস্ট সকালে রিমান্ডে না নিয়েই জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় প্রবীরকে। সেই থেকে তিনি জামিনেই রয়েছেন। পরে যথাযথ যাচাই বাছাই ছাড়াই তড়িঘড়ি করে ফরিদপুরের কোতোয়ালী থানা পুলিশ প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করলে মামলাটি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়।
সাইবার ট্রাইব্যুনাল চার্জশিট গ্রহণ করলে প্রবীরের আইনজীবীরা প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে যান। এরই মধ্যে সাইবার ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য পর পর দুটি দিন ধার্য করেন। ওই ধার্য দিনে বিবাদী প্রবীর সিকদার ও তার পক্ষের আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবীরা আদালতে হাজির থাকলেও বাদি কিংবা বাদি পক্ষের কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ২৬ জানুয়ারি হলেও মামলার পরবর্তী গতি-প্রকৃতি নির্ভর করছে হাইকোর্টের নির্দেশনার ওপর।
(পিএস/এএস/নভেম্বর ২৯, ২০১৬)