স্টাফ রির্পোটার : সরকারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যেদিন চাইবেন সেদিনই ঢাকায় সমাবেশ করবেন। তাই সরকারকে বলবো এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।’

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম-এর ৩৩তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ‘শহীদ জিয়া-বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নাকি সিদ্ধান্ত হয়েছে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় কোনো সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। আপনারা দুটি অনুষ্ঠানে বাধা দিয়েছেন তারপরও খালেদা জিয়া কথা বলেছেন। পেরেছেন বাধা দিয়ে তার কথা বন্ধ করতে? পারেননি। পারবেনও না।’
তিনি বলেন, ‘ফেরাউন এরশাদ, নমরুদ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে নি। এমনকি আপনারাও পারবেন না। অহঙ্কার করবেন না। ফ্যাসিস্ট সরকারকে কিভাবে ক্ষমতা থেকে সরাতে হয় তা এদেশের জনগণ জানে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের দরজা, জানালা বন্ধ করবেন না। তাতে কোনো মঙ্গল হবে না। জনগণের মনের ও চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করেন। যতই বন্দুক নিয়ে চলাফেরা করেন না কেনো শেষ রক্ষা করতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ধস নেমেছে। প্রতিদিনই মানুষ খুন গুম অপহরণের শিকার হচ্ছে। দেশে খুন গুম হত্যা অপহরণ ছাড়া আর কিছুই নেই তারপরও তারা কানে শোনে। চোখে দেখে না।’
তিনি বলেন, ‘শেয়ার বাজার, হলমার্ক, ডেসটিনি করে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে সরকার। তারা ব্যাংকগুলো খেয়ে ফেলেছে। এইসব ব্যাংকগুলোকে বাঁচাতে এখন সরকার ৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। দেখেন ব্যাংকগুলোকে কোথায় নিয়ে গেছে তারা।’
আওয়ামী লীগ সবসময় এদেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে ছলচাতুরি করেছে এই অভিযোগ করে বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘দেখুন ৫ জানুয়ারির আগে তারা কি বলেছে। তারা তখন বলেছে এই নির্বাচন সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য করতে হচ্ছে। পরে সব দলের অংশগ্রহণে আবার একটি নির্বাচন করা হবে। কিন্তু এখন তারা বলছে তারা নাকি পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন।’
তিনি বলেন, ‘বললেই কি থাকা যাবে? যাবে না। আপনারা কি একবারও ভেবেছিলেন ১৫ আগস্টের ট্রাজেডির কথা ভাবেন নাই। বাকশাল কায়েম করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করে পেরেছিলেন ক্ষমতায় থাকতে? পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাকশাল করে তাদের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে ছিলেন। সেই আওয়ামী লীগের আবার পুর্নজম্ম হয়েছে জিয়াউর রহমান যখন বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করলেন তখন নতুন করে নিবন্ধন নিয়ে আবার রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছেন।’
ফখরুল বলেন, ‘এখন সেই আওয়ামী লীগ জিয়ার নাম গন্ধ মুছে দিতে চায়। তারা জিয়াকে স্বীকৃতি দিতে চায় না। তারা তাকে খাটো করতে চায়। এখন নিজেদেরকে স্বঘোষিত সরকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। আর পাঠ্যপুস্তক থেকে জিয়ার নামনিশানা তুলে দিয়ে তাকে খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।’
সভায় মেজর হাফিজ বলেন, ‘শেখ মুজিবকে আমরা অনেক স্বীকৃতি দেই। কিন্তু আমাদের নেতা জিয়াউর রহমানকে স্বীকৃতি দেয় না। আওয়ামী লীগ স্বীকৃতি দিক আর না দিক তাতে আমাদের কোনো যায় আসে না।’
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ. কে. এম আজিজুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, ড্যাব মহাসচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
(ওএস/এএস/মে ২৭, ২০১৪)