মূর্তি বিসর্জনের পুকুর দখল, এবার দূর্গা পূজা হচ্ছে না
নান্দাইল প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কালির বাজার কালি মন্দিরের পুকুর সম্প্রতি বেদখল করে ফেলায় এবার ওই মন্দিরে ১২৩তম দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
পুকুর বেদখলের প্রতিকার চেয়ে পূজারীরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
জানা যায়, উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের কালির বাজারে স্থাপিত কালি মন্দিরে ১শত ২২ বছর ধরে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। পূজারীরা মন্দিরে পাশের মন্দিরের নিজস্ব পুকুরটিতে প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে আসছিল।
সম্প্রতি কালির বাজারের ইজারাদার ওয়ারেছ উদ্দিন গংরা পুকুরটি বাজারের বলে প্রচার দিয়ে সেটি নিজেদের দখলে নিয়ে মাছচাষ শুরু করে। এমনকি পুকুরের পাড়ে থাকা মুর্তি তৈরীর কাঠামোটি ভেঙ্গে পুকুরে পুতে ফেলে।
মন্দিরের সেবাইত প্রাণতোষ বিশ্বাস বলেন, ৩৫ শতক জমির ওই পুকুরটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে, নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে একটি আবেদন করেছিলাম।
কিন্তু দীর্ঘ সময় পেড়িয়ে গেলেও দখলমুক্ত হয়নি পুকুরটি। অন্যদিকে মন্দিরের সেবাইত প্রানতোষকে মন্দিরে না আসার জন্যও হুমকি দিচ্ছে ওই দখলদার চক্রটি।
প্রতিমা বিসর্জনের পুকুরটি বেদখল হয়ে যাওয়ায় বিসর্জন দেয়ার জায়গা না থাকায় এবার পূজার আয়োজন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
সরেজমিনে গেলে ছামেদ আলী (৬০) বলেন, জন্ম থেকে দেখে আসছি পুকুরটি মন্দিরের, এখন এটি কিভাবে বাজারের হয় তা বুঝতে পারলাম না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার বলেন, বাজারটিই মন্দিরের জায়গায়।
ইজারাদারকে না পাওয়ায় ইজারাদারদের পক্ষের আব্দুর রাশিদ বলেন, সেবাইতকে আমরা হুমকি দেইনি। ওনি ভয়ে মন্দিরে আসেন না। পুকুরের দখল প্রসঙ্গে বলেন, উপজেলা প্রশাসন তাদের ইজারা দিয়েছে। কিন্তু এর স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেন নি।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ নান্দাইল উপজেলা আহ্বায়ক এডভোকেট ধীমান কুমার সরকার জানান, ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা করে ওই মন্দিরে দূর্গা পূজা করার ব্যবস্থা করা জরুরী।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতি: দায়িত্ব) জসীম উদ্দিন বলেন, দরখাস্ত পেয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ওসি কে নির্দেশ দিয়েছেন।
নান্দাইল মডেল থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে কেউ তাকে জানায়নি। কমিটির লোকজনকে তার সাথে দেখা করতে বলেন।
(এপি/এলপিবি/অক্টোবর ১০, ২০১৫)