মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জ থেকে গজারিয়ার যাওয়ার পথে মেঘনা নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যাওয়া লঞ্চ এমভি মিরাজ-৪ থেকে শুক্রবার বেলা সাড়ে এনিয়ে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ২৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এরমধ্যে ২৬ জনের লাশ শনাক্ত শেষে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দু’জনের লাশ হাসপাতালের মর্গে ও অপর একজনের লাশ উদ্ধার করে মেঘনা পাড়ে রাখা হয়েছে।

লাশের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে অর্ধশতাধিক।

বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী দলের নেতৃত্বদানকারী ফিরোজ আহমেদ জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চটি ধীরে ধীরে তীরের দিকে টেনে আনা হচ্ছে। লঞ্চটির ওজন প্রায় ১২৭ টন। উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের ধারণ ক্ষমতা ২৫০ টন।

তিনি আরো বলেন, একঘণ্টার মধ্যে লঞ্চটিকে তীরে নিয়ে পুরোদমে উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে। পুরোদমে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার কাজ শেষ করতে সবাই প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গজারিয়া উপজেলার দৌলতপুর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে লঞ্চডুবির এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- জামাল শিকদার (৫০) ও তার ছেলে আবির (১১), সেতারা বেগম (৫৫), টুম্পা বেগম (২৬), শিশু মাহি, শিশু সুমনা, জলিল মালত (৫০), মানিক (১৪), আব্দুল্লাহ আল রেদওয়ান (৪০), রাফিয়া বেগম (৬০), খোরশেদ আলম খোন্দকার (৭৫), ওসমান গণি মোল্লা (৭০), ইসমাইল ফকির (৬০), কৃষ্ণ কমল দাস ৫০, আব্দুল জলিল (৫৫), তাসলিমা আক্তার রিয়া (২৫), রাশিদা বেগম (৫৬), লাইলী বেগম (৫৫), ঋতু (২৪), আব্দুল মান্নান দেওয়ান (৬৫), লক্ষ্মী দাস (৮৫), রজিয়া (৩২), শিশু রুমান, আব্দুল জলিল খান (৭০), মিন্টু সুখানী (৪০), মাসুম (৩৮), রিমা আক্তারসহ (৩২) ২৯ জন।

নিহত টুম্পার স্বামী লিটনও ওই লঞ্চে ছিলেন।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার ৮ বছরের মেয়ে সুমনা ও ৬ বছরের ছেলে মাহিম এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

রাত ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শহীদুল ইসলাম ১৫ জনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। কয়েকটি লাশ শনাক্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া রাত সোয়া ২টার দিকে ট্রলারে করে আরো ৫টি লাশ তীরে নিয়ে আসা হয়।

এর আগে খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছায়। এরইমধ্যে লঞ্চটি শনাক্ত করে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পন্ন করছে প্রত্যয়ের অফিসারসহ ডুবুরিরা।।

ডুবে যাওয়া লঞ্চের যাত্রী খালেক মিয়া জানান, সদরঘাট থেকে দুপুর একটার দিকে শরীয়তপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হয় লঞ্চটি। পথে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে। এতে মাত্র ৩ মিনিটের মধ্যে লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চটিতে ২৮০ থেকে ৩০০ যাত্রী ছিল।

মেঘনায় লঞ্চ ডুবি : নারী ও শিশুসহ ২২ লাশ উদ্ধার

মেঘনায় লঞ্চ ডুবির ঘটনায় ১২ জনের লাশ উদ্ধার

তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে মেঘনায় লঞ্চ ডুবি, ৭ লাশ উদ্ধার

তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে মেঘনায় লঞ্চ ডুবি, ৫ লাশ উদ্ধার




(ওএস/অ/মে ১৬, ২০১৪)