বাপ-বেটার প্রতারণায় ওয়ারিশকৃত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হলেন চাচা

বিশেষ প্রতিনিধি : পিতা-মাতার সম্পত্তিতে ছেলে সন্তানের ক্ষেত্রে সমান অধিকার থাকলেও রাজবাড়ীর পাংশা পৌর এলাকার উনসত্তর বছর বয়সী সৈয়দ- নূর-ই-আলম (ইমরোজ) এর বেলায় ঘটছে উল্টো ঘটনা। পিতা সৈয়দ বায়তুল্লাহ ও মা সৈয়দ নূরুন নাহারের সম্পত্তি থেকে হয়েছে বঞ্চিত। পিতার সমস্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে এখন মায়ের সম্পত্তির ভাগ পেতে দারস্ত হয়েছেন আদালতের। এছাড়াও নিজের নিরাপত্তার কারণে থানায় করেছে সাধারণ ডায়েরী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সৈয়দ-নূর-ই-আলম (ইমরোজ) এর বড় ভাই সৈয়দ-নূর-ই-সামস্ (নওরোজ) তার পৈতিক সম্পত্তি সবটুকু নিজের নামে লিখে নিয়েছে। বর্তমানে নানা বাড়ির সম্পত্তি মায়ের নামে থাকায় সেখানে বসবাস করেন।সেই সম্পত্তির বেশিরভাগ অংশ মায়ের কাছ থেকে লিখে নিয়েছে। এখন বড় ভাইয়ের ছেলে সৈয়দ নূর-ই-আকরাম (সেভান) বসতবাড়িতে কারণে অকারণে প্রবেশ করে হামলা চালাচ্ছে। যাতে করে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়।
ভুক্তভোগী সৈয়দ-নূর-ই-আলম (ইমরোজ) বলেন, আমার পিতার বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণবাড়ী।একসময় আমরা দুই ভাই পাংশার মায়ের নামে থাকা নানা বাড়ির সম্পত্তির উপর বসবাস করতাম। আজ থেকে ৫০ বছর আগে আমার বড় ভাই সৈয়দ-নূর-ই-সামস্ (নওরোজ) দক্ষিণবাড়ী এলাকায় পৈতৃক সম্পত্তির উপর বসবাস করতে থাকে। পরিবারের মতামত ছাড়াই ওই এলাকার সৈয়দ মর্তুজ আলীর কন্যাকে বিয়ে করে বসবাস করতেন। প্রথম স্ত্রীর সাথে বনিবনা না হলে নবাবপুর ইউনিয়নের কুরশি গ্রামের এছানুল হাকিম সাধন (বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান) এর সহোদর ভগ্নী মারুফা আক্তার কে বিয়ে করে।তবে আমার বড় ভাইয়ের সাথে কথা ছিলো সে যেহেতু আমাদের পৈতিক সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছে সেহেতু আমি সেখানে যাবো না। বিনিময়ে পাংশা মায়ের সম্পত্তি আমাকে দিয়ে দেবেন। সেই অনুযায়ী পাংশা পৌরসভার নারায়নপুর এলাকার ৪২ শতাংশ জমির মধ্যে ৬ শতাংশের একটু বেশি জায়গার উপর বহুতল ভবন করে বসবাস করতে থাকি। বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পৌর কর পরিশোধ করতে হওয়ায় মা আমাকে ওই ৬ শতাংশ জমি লিখে দেয়। দীর্ঘদিন মাকে নিয়ে ভালো ভাবে বসবাস করতে থাকি। গত ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল আমার বড় ভাই সৈয়দ-নূর-ই-সামস্ (নওরোজ) মাকে বালিয়াকান্দি উপজেলার দক্ষিণবাড়ী নিয়ে যায়। এর পরেই মায়ের কাছ থেকে পাংশায় মায়ের নামে থাকা প্রায় ৩৬ শতাংশ জমি লিখে নেয়। আমাকে কোন কিছু না জানিয়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে বড় ভাইয়ের ছেলে সৈয়দ নূর-ই-আকরাম (সেভান) বিভিন্ন সময় বাড়িতে এসে হুমকি দিতে থাকে। এমনকি সে একাধিক বার বাড়ির গাছ পালা কেটে ফেলে। যেহেতু এছানুল হাকিম সাধন সাবেক রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের চাচাতো ভাই সেহেতু আমার কিছুই করার ছিলো না।
এ বিষয়ে সৈয়দ-নূর-ই-সামস্ (নওরোজ) এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে। এখানে আপনার কি। কিছু বলার থাকলে আমার ছেলের (সৈয়দ নূর-ই-আকরাম (সেভান)) সাথে কথা বলেন। ফোনটা রিছিভ করেই তার ছেলে বলেন আমার ইটের ভাটা আছে। রাজবাড়ীর সাংবাদিকরা (কয়েক জনের নাম বলেন) আমার পরিচিত। এর পরে তিনি বলেন আমার কথা আপনি রেকর্ড করছেন। আপনার সাথে সামনাসামনি কথা বলবো। আপনি পাংশায় রিপোর্টার্স ইউনিট (সাংবাদিকদের সংগঠন) অফিসে আসেন। এটা আমাদের ঘর ভাড়া দেওয়া। সেখানে আপনার সাথে কথা হবে।
(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২৫)