ধামরাইয়ে নকলে সহায়তা না করায় শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি

দীপক চন্দ্র পাল, ধামরাই : ঢাকার ধামরাইয়ে এসএসসি পরীক্ষার একটি কেন্দ্রে নকল করতে সহায়তা না করায় কক্ষে দায়িত্বরত এক শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় রবিবার ওই ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. রাজিব হোসেন নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চার শিক্ষকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ধামরাইয়ের ধলকুন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রাজিব হোসেন এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রর্যংবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত ইংরেজীয় দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় তিনি এক পরীক্ষার্থীকে মোবাইলসহ ধরে ফেলেন। এরপর ইউএনওর নির্দেশে ওই পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়।
এরপর গত ২৩ এপ্রিল তথ্য ও প্রযুক্তি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের নকল করতে সহায়তা না করায় কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব আমিনুর রহমান, বান্নল লাক্ষু হাজি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফুর, আমছিমুর সেসিপ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার, কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাউজিয়া আক্তারসহ আরও কয়েকজনে রাজিব হোসেনকে পরীক্ষার্থীদের নকলে সহযোগিতা করতে বলেন। কিন্তু তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ওই শিক্ষকদের সহযোগিতায় বহিরাগত আনোয়ার ও কাওছার নামে দুই ব্যক্তি তাকে প্রাণনাশসহ নানা হুমকি দেন। এতে তিনি আতংকিত হয়ে ওইদিনই বিষয়টি মৌখিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়ে দেন। এরপর থেকে তিনি আর পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন না।
শিক্ষক রাজিব হোসেন জানান, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকরা অনিয়মের মাধ্যমে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন। আমি পরীক্ষা শুরুর আগে গত ৭ এপ্রিল ইউএনওর স্যারের উপস্থিতিতে প্রস্তুতি সভায় অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরার পর থেকেই ওই শিক্ষকরা আমার প্রতি বিভিন্নভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ কারণেই রবিবার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব আমিনুর রহমান এবং বান্নল লাক্ষু হাজি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফুর তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষক রাজিব হোসেনকে পরীক্ষায় কক্ষ পরিবর্তন করে দেওয়ার কারণে হয়তো ক্ষোভে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি ইউএনও স্যার তদন্ত করে দেখুক।
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, শিক্ষক রাজিব হোসেনকে থেট দেওয়ার বিষয়ে আমি অবগত আছি। তিনি একজন ভালো শিক্ষক। অভিযোগের বিষয়েও তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(ডিসিপি/এএস/এপ্রিল ২৮, ২০২৫)