রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরের মাদারগঞ্জে মিথ্যা অপপ্রচার করে মামলায় ফাঁসানোর অপচেষ্টা এবং রাজনৈতিক ভাবমুর্তি  ক্ষুণ্নের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার সিধুলি ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ফরহাদ হোসেন টিক্কা।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৯ টায় প্রেসক্লাব জামালপুর কার্যালয়ে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের হামলা মামলায় যখন সর্বশাস্ত হয়ে বছরের পর বছর আত্বগোপন করে থাকতে হয়েছে। ৫ আগষ্টে ছাত্র- জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। আমরা যখন দীর্ঘ সময় পর একটু খোলা আকাশে মুক্তভাবে নিঃশ্বাস নিচ্ছি, ঠিক তখনই আবারো নতুন করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি।

তিনি বলেন, গত বছরের ১৮ মার্চ সকালে আমার বাড়ির পাশে শিমুলতলা জোড়াব্রিজের নিচে লাশ দেখে এলাকার মানুষজন ভিড় করে। আমি দৌড়ে গিয়ে লাশ দেখে এবং লোকজনের মুখে শুনে জানতে পারি এটা পাশের গ্রামের সুমন হতে পারে। আমি নিজেই সুমন মিয়া ওরফে তারির বড়ভাই মতিউর রহমানকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছি। পরে তার পরিবার এবং পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি লোহার শাবল, লোহা কাটার হেস্কু ব্লেড এবং নাট বল্টু খোলার জন্য ব্যবহৃত ডাল যা তার পড়নের লুঙ্গির কোচায় ছিল, উদ্ধার করে।

এই ঘটনায় ১৯ মার্চ সমুনের স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদি হয়ে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার স্বামী সুমন মিয়া ওরফে তারি সন্ধ্যায় ইফতার করে বাড়ি থেকে বের হয়।এরপর রাত সাড়ে ১২ টায় বাড়িতে এসে টয়লেট করে লোহার শাবল নিয়ে বেরিয়ে যান। কোথায় যাচ্ছে জানতে চাইলে বলে কাজে যাচ্ছে। এরপর আর বাড়ি ফিরেনি। যাওয়ার সময় তার মোবাইল ফোনটিও বাড়িতে রেখে যায়। ভোর সকাল ৫ টায় আমার ভাসুর মতিউর রহমান আমাকে ডেকে তুলে বলে পাশের গ্রামের জনৈক ফরহাদ হোসেন টিক্কা ফোন করে তার স্বামীর উৎ করা মাটির নিচে অর্ধচাপা লাশ পড়ে আছে। পরে আমার স্বামীর লুঙ্গি ও জামা দেখে লাশ সনাক্ত করি।

মামলা দায়ের পর পুলিশ এলাকার রফিকুল ইসলাম এবং বেলাল হোসেন নামের দুইজনকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন। সেখানে উল্লেখ করেন মামলা বাদী ভুল তথ্যের ভিত্তিতে মামলাটি দায়ের করেছেন। ঘটনার স্বপক্ষে কোন সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্তের স্বার্থে সন্ধিগ্ধ আসামি রফিকুল ইসলাম এবং বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধেও কোন প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের ২ জনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ হোসেন টিক্কা বলেন, নিহত সুমন মিয়ার ভাই আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান নাশকতার মামলায় ৫ মাস কারাগারে থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে হঠাৎ করে তার ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনা নতুন করে নাটক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

সে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আমার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেছেন।

(আরআর/এএস/এপ্রিল ২৭, ২০২৫)