রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : আইন প্রয়োগে উদাসীনতা ও যথাযথ নজরদারির অভাবে পার্বত্য রাঙ্গামাটি  দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন সংরক্ষিত কাপ্তাই রেঞ্জের আশপাশের বনাঞ্চলের মূল্যবান গাছ উজাড় বন্ধ হচ্ছে না। বন বিভাগের এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী কর্মচারীদের  সহযোগিতায় ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদে সবুজ বেষ্টনীর বিক্রয় নিষিদ্ধ গাছ-গাছালি কেটে প্রতিনিয়তই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সংরক্ষিত বনাঞ্চল-খ্যাত রাঙ্গামাটি কাপ্তাই রেঞ্জ উজাড় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে স্বাধীনতার পর ঝরাজীর্ণ জাকির হোসেন স' মিলের পাশে পুনরায় অন্তত ২টি স’মিল চালু রয়েছে বলে জানা গেছে।

বন থেকে গাছ চুরি করে এসব স’মিলে চিড়ানোসহ নৌ ও সড়ক-পথে বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে স্থানীয় প্রভাবশালী কাঠ পাচার কারী একটি সেন্ডিকেট। এ চক্রটি প্রতিনিয়ত গাছ চুরির পাশাপাশি সংরক্ষিত বনের ভেতরে স’মিল বসানোর কারণে বিরানভূমিতে পরিণত হচ্ছে পাহাড়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলো।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সচেতন মহল জানিয়েছেন, মূলত কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঠ চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্র আরো বেপরোয়া হয়ে ইলেকট্রিক করাতের সাহায্যে স্বল্প সময়ে রিজার্ভ ফরেস্টের মূল্যবান গাছগুলো কেটে হ্রদের পানিতে ফেলে দেয়। পরে সেগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থায় টেনে নিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এরপর বনবিভাগের কতিপয় স্টাফদের যোগসাজশে গাছগুলোকে রাতের অন্ধকারে বাজারজাত করে কাঠ ব্যবসায়ীরা, এ ক্ষেত্রে বনবিভাগের এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারীরা সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শী পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের অনেকেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাপ্তাই রেঞ্জের অধীনস্থ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এসব স’মিলে প্রতিদিন রাত শ'শ' ঘনফুট কাঠ চিড়াই করা হয়। এছাড়া সেখানে প্রতিদিনই কয়েক লাখ টাকার চোরাই কাঠের ব্যবসা চলে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার মোঃ ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, আমার অনুপস্থিতে অতীতে কি হয়েছে, তা আমার জানার বিষয় নয়, তবে আমি দুই মাস হয়েছে কাপ্তাই রেঞ্জের দায়িত্ব নিয়ে বন উজার বন্ধ করনে কাজ করছি, আশা করি কাপ্তাই রেঞ্জের আওতাধীন সকল পাহাড় সবুজ বেস্টনীতে রুপন্তরিত হবে। এ ব্যাপারে দক্ষিণ বন বিভাগের ডি এফ ও'র দিক নির্দেশনায় সংশ্লিষ্ট সকলেই আন্তরিক হয়ে কাজ করছে।

(আরএম/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০২৫)