দুই মাস বেতন পাচ্ছেন না পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মীরা

বিশেষ প্রতিনিধি : পরমাণু শক্তি কমিশনের ৬০০ বিজ্ঞানীসহ ২৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী দুই মাস ধরে বেতনভাতা পাচ্ছেন না। এতে করে প্রচণ্ড দুর্ভোগে পড়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই সঙ্গে সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা বিদেশে বিভিন্ন বৃত্তি ও পড়ালেখার সুযোগ পেলেও আমলাদের বাধায় তারা যেতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন।
আগারগাঁওস্থ পরমাণু শক্তি কমিশনের আনোয়ার হোসেন অডিটোরিয়ামে 'পরমাণু শক্তি কমিশনের স্বায়ত্তশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও কর্তৃত্ববাদী আচরণ'-এর প্রতিবাদে আয়োজিত গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়েছে। যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন কর্মচারী কল্যাণ সমিতি ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন অফিসার্স এসোসিয়েশন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কর্মচারী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, অফিসার্স এসোসিয়েশেনের সাধারণ সম্পাদক এ টি এম গোলাম কিবরিয়া, পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. গোলাম রসূল।
সংবাদ সম্মেলনে বেতন-ভাতার জন্য স্বতন্ত্র হিসাব খোলার দাবি জানিয়ে বলা হয়, কোনো ধরনের উপযোগিতা যাচাই না করেই আইবিএএস প্লাস প্লাস সিস্টেম চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার রীতিনীতি মেনে পরমাণু প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিশেষায়িত গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে বিধায় আইবিএএস সিস্টেমে ঐ বিশেষায়িত কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করা সম্ভব কি না সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এছাড়া পারমাণবিক বিজ্ঞান-সংশ্লিষ্ট গবেষণা এবং এ সংক্রান্ত প্রকল্প ও তার পরিচালন ব্যয়সহ সব তথ্য সংবেদনশীল হওয়ায় আইবিএএস সিস্টেমের মতো একটি সর্বজনীন সিস্টেমে ঐ তথ্য আপলোড করা সমীচীন নয় বলে কমিশনের বিজ্ঞানীরা মনে করে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশের পারমাণবিক বিজ্ঞান-সংশ্লিষ্ট গবেষণা ব্যয় এবং বিজ্ঞানীদের ব্যক্তিগত তথ্য কখনই প্রকাশিত হয় না। এই অবস্থায় কমিশন আইবিএএস সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় কমিশনের অনুকূলে অর্থ ছাড় বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে কমিশনের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন প্রাপ্তিসহ গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
কমিশনে কর্মরত প্রায় ৬০০ বিজ্ঞানীসহ ২৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মার্চ মাসের পর বেতন-ভাতাদি এখনো পাননি। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণও তাদের পেনশনভাতা, আনুতোষিকসহ অন্যান্য ভাতাদি পাচ্ছেন না। কমিশনের ৫২ বছরের ইতিহাসে এই ধরনের অমানবিক, মর্যাদাহানিকর এবং অগ্রহণযোগ্য ঘটনা এই প্রথম।
(এসকেকে/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০২৫)