মদনে পাওনা টাকা চাওয়ায় নৃশংস ভাবে খুন

নীহার রঞ্জন কুন্ডু, ময়মনসিংহ : নেত্রকোনার মদন উপজেলার ৭ নং নায়েকপুর ইউনিয়ন মাহড়া গ্রামে হাজী হোসেন আলী ফকিরের ২য় সন্তান মাজহারুল ইসলাম সাজু (৩৫) কে তারই বন্ধুদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হতে হয়েছে, গত ২৯ মার্চ রাত ৯টায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় পাওনা ৫ লক্ষ টাকা চাওয়াতে একই এলাকার বাসিন্দা আসামী সেকুল মিয়ার সাথে দন্দ চলে আসছিল বেশ কিছুদিন ধরে, সেই আক্রোশে গত ২৯ মার্চ রাতে বাড়ীর সামনে রাস্তায় ফেলে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাজহারুল কে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা, সেই রাতেই মাজহারুলের ভাই আজিজুল ইসলাম প্রথমে মদন স্বাস্থ্য কম্পপ্লেক্স পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরিস্থিতি অবনতি হলে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন মাজহারুল কে। ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৪ এপ্রিল সকাল ৮ টায় মারা যান মাজহারুল।
অতঃপর গত ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার খুন হওয়া মাজহারুল এর ছোট ভাই আজিজুল ফকির বাদী হয়ে মদন থানায় ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাতে মৃত্যু এই মর্মে ১০ জন নামীয় এবং ৭/ ৮ জন অজ্ঞাত আসামী করে মামলা রজু করেন। আসামী ১ / সেকুল মিয়া (২৮) পিতা তৈহিদ গ্রাম নায়েকপুর পশ্চিমপাড়া, ২/ আমিরুল ইসলাম (৩৫) পিতা রাজ্জাক ফকির, ৩/ রতন ফকির (৪৫)উভয়ের পিতা মিরাজ আলী ফকির ঠিকানা একই, ৪/তৈহিদ (৪৮) পিতা মৃত মকবুল ৫/ কাকন মিয়া (২৮) ৬/কাইকুল (৩৫) উভয়ের পিতা আলাল খা, ঠিকানা একই ৭/সাকিল (২৩) পিতা বেনু মিয়া, ৮/ সাব্বির হোসেন (২৫) পিতা লিটন ব্যাপারি ঠিকানা একই, ৯/ ইমরান পাঠান (২৪) পিতা ওলি পাঠান ঠিকানা একই, ১০/ মলয় ফকির ৯/ ইমরান পাঠান (২৪) পিতা ওলি পাঠান ঠিকানা একই, ১০/ মলয় ফকির (২৩) পিতা মানিক ফকির ঠিকানা একই অস্থায়ী ঠিকানা ১ বীর ব্যাটালিয়ন, রামু সেনা নিবাস সৈনিক পদে কর্মরত এ ছাড়াও ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলাটি এস আই ফয়সাল তদন্ত করছেন বলে এজাহারে উল্লেখ আছে। এরই মধ্যে ৬ নং আসামী কাইকুল কে মদন থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহীদ হাসান সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য সেনা সদস্য মলয় ফকির বর্তমানে রামু সেনা নিবাসে কর্মরত, তিনি ঘটনার সময় ছুটিতে এসেছিলেন, বাদী জানান তিনি নিজে প্রত্যক্ষ করেছেন মলয় সেখান ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন, ঘটনার পর পরই মলয় পালিয়ে যান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আসামীরা বাদীর আত্মীয় পরিজন, আসামীরা টাকা লেনদেনের জের ধরে পূ্র্ব পরিকল্পিত ভাবে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত করেন।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহীদ হাসান উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, হত্যা মামলা রজু হওয়ার পর তদন্তর পাশাপাশি আসামী ধরাও চলছে, একটা হত্যা মামলা ২/৩ মাসে তদন্ত শেষ হয় না, এ ব্যাপারে সুক্ষ্ম তদন্তের জন্য থানা পুলিশ সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। আসামী মলয় ফকিরের (সেনা সদস্য) ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, যেহেতু তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত, তদন্ত প্রমাণিত হলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
বাদী আজিজুল বলেন, আজ প্রায় ১৫ দিন হয়ে গেল, পুলিশ ইচ্ছাকৃত আসামী ধরছে না। তবে আসামীদের বাড়ী ঘরে মহিলা ও শিশু ছাড়া কেউ নাই। সবাই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে আছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১জন আসামীকে থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে মদন থানা সূত্রে জানা গেছে।
(এনআরকে/এএস/এপ্রিল ২৩, ২০২৫)