স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে করিমজান ওয়াকফ এস্টেটভুক্ত জমি থেকে সাইনবোর্ড অপসারণ ও মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় মোতোয়াল্লী মাওলানা মোহাম্মদ ঈসা নেয়ামতী।

ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নেয়ামত শাহ (রহ.) জামে মসজিদের সংলগ্ন এলাকায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকী (৫৫), মোহাম্মদ সালেহ জহুর (৪৫) ও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বুলবুল (৫০) মসজিদের সাইনবোর্ড সরিয়ে দিয়ে এস্টেটভুক্ত জমি থেকে মাটি কেটে নিজেদের ভিটায় নিয়ে যান।

অভিযোগকারী ঈসা নেয়ামতী করিমজান ওয়াকফ এস্টেটের পক্ষ থেকে নিয়মিত মোতোয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে এস্টেট পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করে আসছেন এবং তার বিরুদ্ধে হুমকি ও হয়রানিমূলক আচরণ করছেন।

এ কারণে তিনি ২০১৯ সালে হাইকোর্টে রিট মামলা (নং ৭৪৬/১৯) দায়ের করেন। শুনানি শেষে আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রুল জারি ও জমির স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। তবে অভিযুক্তরা সেই আদেশ অমান্য করে মসজিদের জমিতে হস্তক্ষেপ চালান।

পরবর্তীতে অভিযুক্তরা আপিল বিভাগে ‘লীভ টু আপিল’ নং ১১৩৮/২০১৯ দায়ের করলে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগও হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে উভয় পক্ষকে পূর্ববর্তী অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে মোতোয়াল্লী ঈসা নেয়ামতী বলেন, 'আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও তারা সাইনবোর্ড সরিয়ে মাটি নিয়ে গেছেন। এখন আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এবং বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে হয়রানি করছেন, যা আদালত অবমাননার শামিল।'

অভিযোগের জবাবে অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, 'আমি বর্তমানে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। ঈসা এক সময় মোতোয়াল্লী ছিলেন, কিন্তু সেটি বাতিল হয়েছে। যেহেতু অভিযোগ হয়েছে, পুলিশ তদন্ত করলে সত্য উদঘাটিত হবে।'

অপর অভিযুক্ত আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, 'আমাদের পূর্বপুরুষেরা মসজিদটি পরিচালনা করতেন। ২০১৫ সালে ঈসা যেভাবে মোতোয়াল্লী হয়েছিলেন, তা ২০১৮ সালে বাতিল হয়। আমরা ওয়াকফ এস্টেটের জমি কাটিনি, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম জানান, 'অভিযোগটি বন্দর জোনে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

(জেজে/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০২৫)