আগৈলঝাড়ায় বোরো কাটা শুরু হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে
.jpg)
আঞ্চলিক প্রতিনধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় চলতি বোরো মৌসুমের পাকা ধান কাটতে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ক্ষেতের ফসল পাকলেও এবছর আশাতীত ফলন পাবেন না বলে জানিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা। বোরো মৌসুমের শুরু থেকে ধান পাকা পর্যন্ত কোন বৃষ্টি না হলেও পাকা ফসল কাটার সময় বৈশাখের শুরুতেই প্রায় প্রতিদিনি কাল বৈশাখির ছোবলের সাথে মাঝারি ও ভারি বৃস্টির সাথে শিলা বৃষ্টিতে কৃষকেরা ধান কাটা নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় পরছেন। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ধানের ক্ষেত। কাটা ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফসল ঘরে তুলতে বিপাকে পরেছেন কৃষকেরা।
এদিকে এবছর পুরা সেচ মৌসুমে এক ফোটাও বৃস্টি না হওয়ায় ধানে ছড়া আকারে অনেক ছোট হবার পাশাপাশি ধানের শীষ কাটা (ছত্রাক) রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক ফসলের ক্ষেত বিনস্ট হয়ে চাষীদের মাথায় হাত পরেছে। শীষ কাটা রোগের কারনে ধানের শষ্য পরিপক্ক হয়নি; এ কারনে ফসল লালচে হয়ে অপরিপক্ষতা নিয়ে গাছ দাড়িয়ে থাকায় ক্ষেতে ফলনের চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
চাষিরা জানিয়েছেন শীষ কাটা রোগের কারনে তাদের জমিতে ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও কোন সুফল পায়নি তারা। কোথাও কোথাও ধানের পুরো ক্ষেত তীব্র খড়ার সাথে রোগের কারণে পুরে যাওয়ায় শুধু গাছই দাড়িয়ে আছে, তাতে কোন ফসল নেই। আবার ফসলের ক্ষেতে বৈশাখি ঝড়ের ছোবলে পাকা, কাঁচা-পাকা ধান গাছ মাটিতে পরে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শ্রমিকেরা সেই ধান কাটতেও অনীহা প্রকাশ করছে।
একদিকে খড়া আর রোগে আক্রান্ত হয়ে ফসল নস্ট হবার পাশাপাশি চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই কাল বৈশাখি ও বৃস্টির কারণে উঠতি ফসল ঘরে তোলা নিয়ে কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।
বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে চাষিদের অধিকাংশ ফসলের ক্ষেত। অন্যদিকে সরকার বাজার মূল্য নির্ধারিত করলেও সরকারীভাবে ধান ক্রয় শুরু না হওয়ায় উৎপাদিত ফসলের স্থানীয় বাজার মূল্য নিয়ে কৃষকেরা হতাশার মধ্যে রয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিযূষ রায় জানান, চলতি বছর ৯ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে চাষাবাদ শুরু হয়েছিল। লক্ষমাত্রার চেয়েওে চাষাবাদ বেশী হয়েছে। হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন নির্ধারন করা হয়ছে ৫ মেট্টিকটান ধান, যা চাল হিসেবে সাড়ে তিন বা চার মেট্টিক টন। ধান চাষ ও ফলনে আগৈলঝাড়া উপজেলায় চাহিদার চেয়ে বরাবর খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকে। তব এই বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ খরা, ছত্রাকের আক্রমন এবং বর্তমানে শিলাবৃষ্টি ও কালৈেবশাখি ঝড়ে কৃষকের কিছু ধান ও ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। ফলে এ বছর উৎপাদন গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে বলে জানিয়ে বর্তমানে মাঠে ক্রপ কাটিং চলছে বলে জানান তিনি।
(টিবি/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০২৫)