স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কাটনহারি বামনবাড়ির মৃত আব্দুস সামাদের বাড়িতে একদল চিহৃিত দুষ্কৃতিকারীরা লুটপাট শেষে আগুনে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে তার তিন সন্তানের বসতবাড়িসহ আবাসিক সকল ঘরদুয়ার। ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ এপ্রিল সন্ধা আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে। এ ব্যাপারে বোদা থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী মোঃ রুবেল রানা (২৫)। বাদী রুবেল রানা মৃত আব্দুস সামাদের ছেলের ঘরের নাতি। তার বাবার নাম সুজন আলী।

আজ মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে দেখে গেছে, ওই বাড়ির তিনটি পরিবারের থাকা, রান্না, গোয়ালঘরসহ সকল ঘরদুয়ার পুড়ে ছারখার করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তিনটি পরিবারের সদস্যদের পরনের বস্ত্র ছাড়া বিকল্প কোন কাপড় চোপড়া নেই। ঘরের বইপুস্তক, কোরআন শরীফ, খাতাপত্র পুড়ে গেছে ছাই হয়ে আছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, খারুয়া গ্রামের ফজল হকের ছেলে আব্দুল আজিজ, মো. বাতেন আলীর ছেলে এবং বাতেন আলী নেতৃত্বে ২০ থেকে থেকে ২৫ জনের একটি দল লাঠিসোটা নিয়ে ওই বাড়িতে প্রবেশ করেই লুটপাট শুরু করে। নিয়ে যায় গোয়ালের গৃহপালিত প্রাণি, বাড়ির টেলিভিশন, ধান চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। লুটপাট, তান্ডব চলে ঘণ্টাব্যাপী। পরে বাড়িতে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। বাড়িঘর পুড়ে ছারখার পর্যন্ত দুষ্কৃতিকারীরা ঘটনাস্থলে লাঠিসোটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কাউকে আগুন নেভানোর সুযোগ পর্যন্ত দেয়নি তারা।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, বাড়িটির ভয়াবহ অবস্থা। ওই বাড়ির তিনটি পরিবারের মোট ১৩ জন সদস্য পাশের একটি বাড়িতে মানবেতর রাত্রিযাপন করছে।

এই ঘটনা পর বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিম উদ্দীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি এ বিষয়ে বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মামলার বাদী রুবেল রানা জানায়, পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে লুটপাট হয়েছে, আগুন পুড়িয়ে দিয়েছে ঘরবাড়ি, আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যের লাঠিসোটা নিয়ে চিহৃিত ব্যক্তিরা আক্রমন করেছে। আমরা ন্যায় বিচার চাচ্ছি।

বাদীর দাদী জয়নুব খাতুন বলেন, আমার স্বামী মারা গেছেন, তিন সন্তান, নাতি পুতি নিয়ে কোন খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি। এইভাবে বাড়ি জ্বালিয়ে দিল, লুটপাট করলো, আমাদের ফেরে ফেলতে চাচ্ছি, আমরা এর বিচার চাই, বেঁচে থাকতে চাই।

এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ব্যক্তি আব্দুল আজিজ বলে যাদের বাড়িঘর পুড়ে দেওয়া হয়েছে তারা মাদক ব্যবসায়ী।

অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি বাতেন আলী বলেন, এরা ভালো না এলাকার যুবক ছেলেদের নষ্ট করে ফেলেছে। আমার সন্তান শামীম মাদকাসক্ত, এই ছেলেকে আমি বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি। যাদের বাড়িঘর পুড়ে দেওয়া হয়েছে ওরা মাদক ব্যবসায়ী।

কেউ অপরাধ করলে পুলিশকে না জানিয়ে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া ঠিক হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ, আর্মি ওদের কিছু করতে পারে, উচ্ছেদ ছাড়া উপায় নেই।

(আরএআর/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২৫)