নড়াইলের কালিয়ায় খুনের জের
২০টি বাড়িতে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ, আটক ২০

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে খুনের পরে রাতভর অগ্নিসংযোগ আর লুটপাট চলেছে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে।
গত শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহত ফরিদ মোল্যা খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টায় তার মৃত্যু ঘটে।
এদিকে আজ শনিবার দুপুরে খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন তৌহিদ মোল্যা(৫০) নামের আহত একজনের মৃত্যুর খবর ছড়ায় পরিবারের লোকেরা।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অভিযানে ঘটনার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০ জনকে আটক করে ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরন করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যা পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ইতিপূর্বে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘঠেছে। থানায় উভয় পক্ষের একাধিক মামলাও রয়েছে। ঈদের দিন থেকে গ্রামটিতে উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিলো।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার নড়াইলে আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে আফতাব মোল্য পক্ষের লোকেরা তাকে মারপিট করে। এর জের ধরে সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মিলন মোল্যা পক্ষের লোকেরা আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। খবর পেয়ে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। আফতাব মোল্যা পক্ষের আহতরা হলেন, করিম মুন্সি (৪৯), ফরিদ মোল্লা (৫৭), হুসাইন শেখ (১৮), আশরাফ মোল্লা (৫০), বশির মুন্সি (৪৫), করিম মুন্সী (৩৭), জালাল মুন্সি (৪৭)। মিলন মোল্যা পক্ষের আহতরা হলেন তৌহিদ মোল্লা (৫০), আলমিস শেখ (৩৫) নিরব মোল্লা (১২), হাসিব মোল্লা (১৫), কিবরিয়া শেখ (২৮), ওসমান মোল্লা (১৫), কামাল কাজী (৪০), তরিক শেখ (২৪), জাকারিয়া শেখ (২৫), দিদার শেখ (১৮) ।
এরপর সন্ধ্যা থেকে সারারাত চলে হামলা-পাল্টা হামলা। ঘটনার উত্তেজনায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বাবরা-হাচলা ইউপি চেয়ারম্যান পিকুল মোল্যার বাড়ির সহ অন্ততঃ ২০টি বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
আগুনে পুরে ভস্মিভূত হয়েছে মোস্তাক শেখ, বুলু শেখ, খালিদ শেখ, কামরুল মল্লিক, রঞ্জু শেখ,জামির মল্লিক, জনি মল্লিক সহ ২০টি বাড়ি। লুটের ভয়ে এলাকার মানুষেরা মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। ভয় আতঙ্ক আর নিরাপত্তাহীনতায় কুঁকড়ে গেছে কাঞ্চনপুর গ্রামের সাধারণ মানুষজন।
কালিয়া থানার ওসি মোঃ রাশিদুল ইসলাম বলেন,হত্যার খবর এলাকায় আসার পরপরই কিছু ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনুনাগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
(আরএম/এসপি/এপ্রিল ১২, ২০২৫)