শফিকুল ইসলাম, ফুলপুর : ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোতা খড়িয়া নদী এখন সবুজ ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে।

জানা যায়, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্রের নদের শাখা হয়ে খড়িয়া নদী ফুলপুরে রামভদ্রপুর, ভাইটকান্দি, পয়ারী, রুপসী ও ফুলপুর ইউনিয়নের প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কংশ নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এক সময়ে পূর্বাঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিরাট ভূমিকা রাখতো ওই নদী। এ নদীকে কেন্দ্র করেই ফুলপুরের রামভদ্রপুর, বাহাদুরপুর, আমুয়াকান্দা, ছনকান্দা, রুপসী ও ডেফুলিয়া বাজারসহ অনেক হাটবাজার গড়ে উঠেছিল। প্রায় ২ যুগ আগেও মানুষ এ নদী পথ ব্যবহার করে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহন করত।

বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা এ নদী পথে ধান, পাট, গম ও কাঁঠালসহ নানান পন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে আমদানি-রপ্তানি করত। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিতভাবে উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করার ফলে নদীতে পানি প্রবাহ একদম কমে গেছে। ফলে দিন দিন নদীটি ভরাট হয়ে সবুজ ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ নির্মাণ করে মাছ চাষ করায় বর্ষার মৌসুমে নদীতে চলমান পানি প্রবাহে মারাত্নক বিঘ্ন ঘটে। নদীটির ব্যাপারে সঠিক তদারকি না থাকার কারণে ইতিমধ্যে প্রভাবশালীরা নদীর বিভিন্ন অংশ দখল করে স্থাপনা নির্মাণেও মনোযোগী হয়েছেন। তবে বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে নদীর কিছু অংশ লোক দেখানো খনন করে বালু লোটপাটের মহোৎসব হয়েছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গোপনে নদীটির বিভিন্ন স্থানে চর বিক্রির বিষয়টিও এখন ওপেন-সিক্রেট বলে দাবী অনেকের।

এ বিষয়ে শ্যামপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম মৌলভী বলেন, নদীটিকে বাঁচাতে হলে জরুরী ভিত্তিতে এটি খননের প্রয়োজন। সেইসাথে নদী থেকে অবৈধ দলখদারদের উচ্ছেদ করতে হবে।

ঘোমগাঁও গ্রামের আজিজুল ইসলাম বলেন, গভীরভাবে খনন করলে নদীটি দ্রুতই তার নব্যতা ফিরে পাবে। নদী সংলগ্ন মানুষজন আগের মতো মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।

পৌর বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, খড়িয়ার যৌলস ফিরিয়ে আনতে দ্রুত সংষ্কারের প্রয়োজন। নদীর পৌর অংশের চরগুলোতে শিশু পার্ক নির্মাণ করলে ভাল হবে।

(এসআই/এসপি/এপ্রিল ১২, ২০২৫)