ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় রফিক মোল্যা (৩৫) নামের এক ভুয়া সাংবাদিকেক জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত৷ নিউজের ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইলের অপরাধে ২ হাজার টাকা জরিমানা এবং মুচলেকায় মিলল মুক্তি। 

গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলা ভূমি অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বিষয়টি ফোন কলের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানান। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় ভুয়া সাংবাদিক রফিকের বাড়িতে গিয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ.কে.এম রায়হানুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান পরিচালনা করেন।

দৈনিক অগ্নীবিনা নামের এক নাম সর্বস্ব পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়দানকারী রফিক উপজেলার বানা ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর মোল্লার ছেলে। সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তার প্রকাশিত কোন সংবাদ এ পর্যন্ত সে দেখাতে পারেনি।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল এক নারী ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা বুড়াইচ ইউনিয়নে শিয়ালদী গ্রামে বেড়াতে গেলে সেখানে ওই নারীকে এবং তার চাচাতো দুলাভাইকে নিয়ে মিথ্যা অনৈতিক আপত্তিকর অপবাদ দিয়ে ওই নারীর দুলাভাই এর কাছে একবার ৭ লক্ষ টাকা দাবি করে রফিক নামের ওই ভুয়া সাংবাদিক। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে ভুক্তভোগী নারী ও তাদের স্বজনরা জানালে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিক নামধারী প্রতারক রফিকের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতার পেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রফিককে জরিমানা করে এবং মুচলেকা নিয়ে রফিককে প্রথমবারের মত ক্ষমা করে।

ভুক্তভোগী ওই নারীর মা বলেন সাংবাদিক পরিচয় রফিকুল আমার বাড়িতে এসে মেয়ের নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। আমার স্বামী ভ্যান চালায় কোথা থেকে এত টাকা দেব। তারপরে বলে তাহলে মেয়েকে দিয়ে তোমার জামাইয়ের নামে অপবাদ দিতে হবে,আমরা সালিশ মীমাংসা করে ৫ লক্ষ টাকা এনে তোমাদের দুই লক্ষ দিয়ে বাকি টাকা আমরা নিয়ে যাবো।

সহকারী কমিশনার ভূমি এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ.কে.এম রায়হানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে রফিকুলকে তার বাড়িতে গিয়ে আটক করি সকল তথ্য প্রমান ও কল রেকর্ডিং পর্যালোচনা করে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ও নিজে ভুল স্বীকার করায় প্রথমে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হলে, তার মা ব্রেন স্ট্রোকের রোগী ও ১৯ মাসের ছেলে সহ দুই সন্তান নিয়ে অভাব অনটনের জীবনযাপন করছে এই বলে পা জড়িয়ে ধরায় মানবিক বিবেচনায় ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোন কাজ করবে না বলে মুচলেকা দেয়।

তিনি আরো বলেন, রফিকুল নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন, 'আমি আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রেসক্লাব ক্লাবের সদস্য ও অগ্নিশিখা উপজেলা প্রতিনিধি এবং এই বাংলার স্টাফ রিপোর্টার।' আইডি কার্ড দেখতে চাইলে এই বাংলার কার্ড নেই অগ্নিশিখার কার্ডের মেয়াদ নেই বলে জানায়।

(টিইউ/এসপি/এপ্রিল ১২, ২০২৫)