ফরিদপুরে সরকারি পুকুর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের কানাইপুরে একটি সরকারি পুকুরে ভাসতে থাকা স্থানীয় সুজন মন্ডল (২৬) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়ন ইউনিয়নের মালাঙা গ্রামে অবস্থিত জেলা পরিষদের একটি সরকারি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় সুজনের লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
স্থানীয় মালাঙা গ্রামের শিরীষ মণ্ডলের ছেলে নিহত সুজন মন্ডল ফরিদপুর সদরের কানাইপুরের হলপট্টি এলাকায় পুরি, সিঙ্গারা ও সমুচা বানিয়ে বিক্রি করে জীবীকা নির্বাহ করতেন। পরিবার জানায়, নিহত সুজন শুত্রবার সকালে প্রতিদিনের মতো পুকুর ঘাটে বসে ব্রাস করছিলেন। এরপর একমাত্র পুত্র সুজনকে না পেয়ে তার মা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। শুক্তবার দুপুর দেড়টার স্থানীয় প্রতিবেশী জনৈক রনজিৎ মজুমদার ওই পুকুরে গোসল করতে এসে ভাসমান অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পেয়ে আশেপাশের প্রতিবেশীদের জানালে তাঁরা এসে সুজনের লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করে। পরিবার ও এলাকাবাসীর ধারণা, সুজন দীর্ঘদিন মৃগী রোগে ভুগছিলেন, তাতেই হয়তো তিনি মারা গেছেন। সুজন মন্ডল কানাইপুর সিনেমা হল পট্রি বাবা শিরীষ মন্ডলের সঙ্গে সারাদিন সিঙ্গারা, পুরি, সমুচা জাতীয় ভাজাপোড়া খাদ্য সামগ্রী তৈরি ও বিক্রি করতেন। বৈবাহিক দিক থেকে সুজন বিবাহিত ও মৃত্যুকালে স্ত্রী, ২ মেয়ে ও ১ ছেলে রেখে গেছেন।
৯ নং কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আলতাফ হুসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, 'খবর শুনে আমি ওই নিহতের বাড়ীতে গিয়ে লাশ দেখে এসেছি। নিহতের পরিবার ধারণা মৃগী রোগের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।'
এদিকে, পুকুর থেকে লাশ উদ্ধারের সময় একালাবাসী পুলিশকে জানাতে বললেও তাঁর পরিবার জানায়, যেহেতু সে মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলো এবং যেহেতু পুকুর ঘাটে তার ব্যবহৃত ব্রাশ পাওয়া গেছে, তাই হয়তো ওই রোগের কারণেই সে পুকুরে ডুবে মারা গেছে। তাছাড়া, পুলিশ জানলে তাঁরা এসে লাশ নিয়ে যাবেন, কাটা ছিঁড়া করবেন এমনটি চাননি নিজের একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর পিতা শিরীষ মন্ডল। সুজনের বাবার দাবি, তাঁর ও তাঁর ছেলের কোন শত্রু ছিলো না। কাউকে তাঁর সন্দেহ হয়না।
এদিকে, ফরিদপুর কোতয়ালি থানা ব্যাপারটা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে এসে লাশ নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদ উজ্জামান উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ'কে জানান, 'যদিও নিহতের পরিবারের ধারণা মৃগী রোগের কারণেই সুজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অনেকেই আবার এ বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করছিলেন। যেহেতু নিহত সুজন মন্ডল কিভাবে মারা গেছেন যে বিষয়ে কেউ অবগত নয়, তাই তার মৃত্যু রহস্য উন্মোচন আমরা লাশ নিয়ে এসেছি। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে নিহত সুজন মন্ডলের হস্তান্তর করা হবে।
(আরআর/এএস/এপ্রিল ১২, ২০২৫)