প্রভাবশালীর খাল ভরাটে ৩ হাজার গ্রামবাসীর দুর্ভোগ

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : পশ্চাদপদ গ্রামে এখনো সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেনি। যাতায়াতের ক্ষেত্রে খালই তাদের ভরসা। বর্ষা মৌসুমে নৌকায় চলে যাতায়াত। শুস্ক মৌসুমে খালপাড় দিয়ে পায়ে হেটে গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। এ খাল দখলে নিয়ে বালু ভরাট করেছেন প্রভাবশালী দুই ভাই। এতেই চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের বানারঝোড় গ্রামের ৩ হাজার মানুষ।
খালটি বানারঝোড় গ্রামের পার্শ্ববর্তী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার করফা গ্রামের প্রভাবশালী নুরইসলাম শেখ ও তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য রফিক শেখ দখল করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে বানারঝোড় গ্রামবাসী মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) একটি লিখিত অভিযোগ কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে দায়ের করেছেন।
অভিযোগ বলা হয়েছে, কান্দি ইউনিয়নের বানারঝোড় গ্রামের প্রায় ৩ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র খালটি পাশ^বর্তী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার করফা গ্রামের প্রভাবশালী নুরইসলাম শেখ ও তার ভাই সাবেক ইউপিসদস্য রফিক শেখ দখল করে নেয়। তারা ১ ভোল্ট স্লুইচ গেটের সামনের অংশে বালু ভরাট করেছে। এতে গ্রামবাসীর চলাচল, পণ্য পরিবহন ও ব্যবসা বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বাঁধার মুখে খাল খনন কাজ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
গ্রামবাসী সরকারি এ খাল ভূমিদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করে যাতায়াতের পথ সুগম করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বানারঝোড় গ্রামের ভুক্তভোগী শওকত মল্লিক বলেন, বানারঝোড় গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য কোন রাস্তা নেই। বর্ষার মৌসুমে আমরা নৌকায়ও শুকনো মৌসুমেএ খাল পাড় দিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করি। এ খাল প্রভাবশালী দু’ ভাই দখলে নিয়ে বালু ভরাট করেছে। এখন খালপাড় দিয়ে বালু ভেঙ্গে চলাচল করা যাচ্ছে না। অন্যের জমির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। গ্রামের মানুষ নৌকা যেখানে নোঙ্গর করে, সেই জায়গা দখলে নিয়েছে তারা। এ কারণে নৌকা নেঙ্গর, পণ্য পরিবহন ও ব্যবসা বাণিজ্যে সমস্যা হচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী ছেলে-মেয়েরাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এছাড়া জরুরী রোগী পরিবহনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চিয়তা। এছাড়া খাল খনন কাজেও তারা বাঁধা দিয়েছে। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
অভিযুক্ত নুর ইসলাম শেখ বলেন, আমি কোন সরকারি খাল দখল করিনি। আমার নিজের জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করেছি। খাল খনন কাজে আমি কোন বাঁধা দেইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।
কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুষার মধু বলেন, বানারঝোড় গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই খাল। সরকারিভাবে এই খালটি খনন করার জন্য ঠিকাদার কাজ শুরু করলে করফা গ্রামের নুরইসলাম শেখ ও তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য রফিক শেখ বাঁধা দেয়। পরে ঠিকাদার কাজ না করে চলে যায়। বিষয়টি আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: মঈনুল হক বলেন, এ বিষয়ে আমরা গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(টিবি/এসপি/এপ্রিল ০৯, ২০২৫)