ভূমিহীন পল্লীতে হামলা, মারপিট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
হাইকোর্ট থেকে ২৪ জন অন্তবর্তীকালিন জামিন নিলেও ৩২ জন প্রকাশ্যে
.jpg)
রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার রাধাবল্লভপুর মদনপাড়ার ভূমিহীন পল্লীতে হামলা, মারপিট, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হলেও দুই দফায় ২৪ জন মহমান্য হাইকোর্ট থেকে অন্তবর্তীকালিন জামিন নিয়েছেন। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরদিন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে ঈদের পর থেকে ৩২ জন আসামী বাড়িতে অবস্থান করে প্রকাশ্যে হুমকি ধামকি দিলেও পুলিশ তাদের ধরছে না বলে অভিযোগ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আশাশুনি উপজেলার রাধাবল্লভপুর মদনপাড়ায় মরিচ্চাপ নদীর চরভরাটি জমিতে দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ৩৫ টি ভূমিহীন পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলো। কিছু জমি তারা ডিসিআর পেয়েছেন। সম্প্রতি মরিচ্চাপ নদী খননের ফলে তাদের অনেক জমি বেড়িবাঁধের মধ্যে চলে যায়। ফলে তারা জীবন-জীবিকার সুবিধার্থে ১৫ জনের একটি মৎস্যজীবি দল গঠন করে চরের ৩০ বিঘা জমি পেতে পানি উন্নয়ন বোর্ডে ডিসিআরের আবেদন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ব্রাহ্মণ তেঁতুলিয়া গ্রামের বিএনপি নেতা জহিরউদ্দিন মোড়ল, তার চাচাত ভাই কাদাকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ, রইচউদ্দিন মোড়ল, নজরুল সরদার, বড়খোকনসহ একটি চক্র তাদেরকে ওই জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলো। বাধ্য হয়ে আজিজুল গাজী বাদি হয়ে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদসলতে রইচউদ্দিনসহ নয় জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
মামলার নোটিশ পেয়ে আবু সাঈদ ও জহির উদনের নেতৃত্বে দেড় শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী গত ২৭ ফেব্রুয়ারিয়ারী সকালে মদনপাড়ার ভূমিহীন পল্লীতে হামলা, ভাংচুর ও ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাট শেষে বাড়িতে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আহত ২০ জন ভূমিহীনদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় জাকির হোসেন বাদি হয়ে পরদিন ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮০ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। সম্প্রতি প্রধান আটজন বাদে ২৪ জন আসামী দুই দফায় মহামান্য হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের অন্তবর্তীকালিন জামিন নেন। ভূমিহীনদের দেখানো মতে পুলিশ জাহাঙ্গীর আলম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে সোমাবার আদালতে হাজির করালে আদালত তাকে জামিন দেন।
মামলার বাদি জাকির হোসেন বলেন, জামিনে মুক্তি পাওয়া জাহাঙ্গীর আলম, অনন্তবর্তীকালিন জামিন পাওয়া ২৪ জনসহ সকল আসামীরা কয়েকদিন ধরে বাড়িতে অবস্থান করছে। ফলে আসামীরা বাদি ও সাক্ষীদের নতুন করে হুমকি দিচ্ছে। নতুন করে তারা অস্ত্রশস্ত্র যোগাড় করে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ভূমিহীনদের ওই জমি আবারো জবরদখল করার হুমকি দিচ্ছে। বিষয়টি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তবে পুলিশ আসার আগেই কিভাবে আসামীরা আত্মগোপন করছে ও পুলিশ চলে গেলে বাড়ি ফিরছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।
(আরকে/এসপি/এপ্রিল ০৮, ২০২৫)