নড়াইলে শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে ঈদের বাজার, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : সব শ্রেনি পেশার মানুষের পদচারণায় মূখরিত হয়ে উঠেছে নড়াইলে মার্কেটগুলি। নানা সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছে মার্কেট ও আশপাশে ছোটবড় দোকানগুলো। পছন্দের পোশাক কিনতে বিভিন্ন মার্কেট ও দোকান ঘুরে দেখছে ক্রেতারাও। সময় এগিয়ে আসার সাথে সাথে মার্কেটে বাড়ছে কেনাকাটা। সকাল থেকে ক্রেতাদের উপস্থিতি ও হাকডাকে মুখরিত সব মার্কেট ও দোকানপাট। দরদাম করে সামর্থ্যের মধ্যে কেনাবেচা করছে তারা। এক কথায়, শেষ মুহূর্তে জমা দিয়েছেন নড়াইলের ঈদের বাজার।
মার্কেটগুলোতে উপচে ভিড় জানান দিচ্ছে সামনে ঈদ। ভিড় এড়াতে আগে-ভাগে তাদের এই কেনাকাটা। গত বছরে সন্ধ্যার পর থেকে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেলে ও এবছর দুপুরের আগে থেকেই ক্রেতারা মার্কেটে ভিড় করছেন।
জেলা শহরে বেলা ১১ টা বাজলেই মার্কেটগুলোতে বাড়ছে কেনাবেচার ব্যস্ততা।ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত বিপণি বিতান, শপিং মল, মার্কেট, ছোট-বড় ব্র্যান্ডের দোকানে চলছে কেনাকাটার ধুম।
শুক্রবার (২১ মার্চ) জেলা শহরের আলতাফ হোসেন সুপার মার্কেট, জননী সুপার মার্কেট, ভূইয়া মার্কেট, সুপার মার্কেট চত্বরের বৈশাখী ফ্যাশান, শুভেচ্ছা ফ্যাশান,নিউ ফ্যাশান পয়েন্ট,রুপা বস্ত্রালয়, দীপক স্টোরসহ বিভিন্ন দোকানগুলো কেনাবেচা চলছে সমানতালে।
শপিংমলগুলোতে সকাল ১০ টা বাজার সাথে সাথে শুরু হচ্ছে ব্যস্ততা। নানা ধরনের অফার এবং ঈদ স্পেশাল কালেকশনে বিক্রি করা হচ্ছে জনপ্রিয় শপিংমলগুলোতে। পোশাকের দোকানগুলোতে পুরুষদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, গেঞ্জি, টিশার্ট, নারীদের শাড়ি, থ্রিপিস, ওয়ান পিস, কুর্তা এবং বাচ্চা ও শিশুদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, ফ্রক, গেঞ্জিসেটসহ আধুনিক ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। একইসঙ্গে কসমেটিকস, জুতা, ঘর সাজানোর সামগ্রী এবং গহনার দোকানগুলোতেও ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।
আল- বারাকা সিট বিতানের মালিক শামিম আজিজ বলেন, এ বছর ঈদের কেনাকাটা আগেভাগেই শুরু হয়েছে। কাপড়ের মূল্য ক্রেতা সাধারণের সামর্থ্যের মধ্যে রয়েছে। প্রতিদিনই সকাল ১১ টার পর বাড়ছে ভিড়। নারী, পুরুষ ও শিশুর জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের নতুন পোশাকগুলো বিক্রি হচ্ছে।
নড়াইল জননী গার্মেন্টসের মালিক তাপস কুরি বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবছর কেনাকাটা ভাল। দুপুরের আগে লোকজনের ভিড় হচ্ছে। ক্রেতাদের এ বছর চাহিদার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি থ্রি পিচ, জমজম থ্রী পিচ, গঙ্গা থ্রিপিচ। এ গুলো ছাড়াও সিল্ক, জামদানি, কাতান, কাশ্মীরি কাজ করা শাড়ি ও লেহেঙ্গা, পুরুষদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, টিশার্ট এবং শিশুদের জন্য নানা রঙের সূতির পোশাক।
পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দ মতো জামা,জুতা, আনুষাঙ্গিক কেনাকাটা করতে এসেছেন রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন,ভিড় এড়াতে আগেবাগেই কেনাকাটা করতে এসেছেন তিনি। ১০ হাজার টাকার বাজেটে আসা ক্রেতার দাবি বরাবরের মতোই ঈদকে সামনে রেখে কাপড়ের বাড়তি দাম চাইছেন বিক্রেতারা।
নাসরিন বেগম নামে এক স্কুল শিক্ষিকা জানান, বাচ্চার স্কুল বন্ধ সেজন্য শেষ সময়ে ঝামেলা এড়াতে কেনাকাটা শেষ করছি।ব্যবসায়ীরা দাম কিছুটা বেশিই চাচ্ছেন। দামাদামি করে নিতে হচ্ছে। তাছাড়া এবার সবাই রোজা রেখে কষ্ট হলেও দিনের বেলাতেই কেনাকাটা শেষ করতে চাচ্ছেন। সেজন্য ভিড়ও একটু বেশি।
বাহিরগ্রাম থেকে আসা অভি মোল্যা নামের আরেক ক্রেতা বলেন,আমরা দুই বন্ধু এক সাথে পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি।গত বছর দুই জন এক সাথে এক ডিজাইনের পাঞ্জাবি কিনছিলাম। এ বছর ও কিনতে এসেছি। কয় একটা দোকান দেখছি। তবে গত বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, জেলা শহরে মার্কেট এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সতর্ক রয়েছি। মোবাইল,টাকা চুরিসহ ছোটখাটো অপরাধ ঠেকাতে সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। সব কিছু মিলে, এ বছর নড়াইলে ঈদের পরিবেশ পরিস্থিতি বেশ ভালো, নেই উঠবে উদ্বেগ-উকণ্ঠা তথা আতঙ্ক।
(আরএম/এসপি/মার্চ ২৮, ২০২৫)