সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজির টেপার বিল এলাকা ও গুলিশাখালী ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির ‘বাইশ ও তেইশের ছিলা’র মাঝামাঝি শাপলা বিলের দুটি এলাকার লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে থেকে কোথাও নতুন করে কোন আগুনের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়নি। বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন লাগার পুরো এলাকা ঘুরে দেখছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ধোয়ার কুন্ডলি পাকিয়ে নতুন করে আগুন জ্বলে না। আজ মঙ্গলবার রাতে আগুন নেভানোর কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করবে ফায়ার সার্ভিস। তবে, আগুন লাগার স্থানগুলোর গাছের গোড়া ও লতাপাতার নিচে কোথাও চাপা আগুন রয়েছে কিনা সে বিষয়টি আরো এক দিন পর্যবেক্ষণে রাখবে বন বিভাগ।

কলমতেজির টেপার বিল এলাকা সুন্দরবনের দুই কিলোমিটার গহীনে ও গুলিশাখালী ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির শাপলা বিল এলাকা ৩ কিলোমিটার গহীনে থাকাসহ দইি দুটি এলাকার আশপাশে পানি কোন উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে লোকালয় সন্নিহিত মরাভোলা নদীর পানির উপর নির্ভর করতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের কর্মীদের। আর এই মরাবোলা নদীতে ভাটার সময় পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড দূর্গম এই ম্যানগ্রোভ বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে দুদিন ধরে বেগ পেতে হয়েছে বাগেরহাট ও খুলনার ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটসহ বনকর্মীদের। বন বিভাগের প্রাথমিক হিসেবে সুন্দরবনের টেপার বিল ও শাপলা বিলের দুটি এলাকার লাগা আগুনে পড়ে গেছে ১০ একর বনভূমির গাছপাল।

ফায়ার সার্ভিস ও সুন্দরবন বিভাগের পক্ষ থেকে এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, সোমবার রাতের জোয়ারে মরাভোলা নদী থেকে পানি তুলে ফায়ার সার্ভিস ও বনকর্মীরা গুলিশাখালী ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির ‘বাইশ ও তেইশের ছিলা’র মাঝামাঝি শাপলা বিল এলাকায় লাগা আগুন সকালের মধ্যেই নিয়ন্ত্রনে এসেছে। রবিবার সকালে এই এলাকায় লাগা আগুনে পুড়ে গেছে ৫ একর বনভূমির গাছপাল। শনিবার সকালে কলমতেজির টেপার বিল এলাকা লাগা আগুন এরআগের দিন সোমবার রাতে নিয়ন্ত্রনে আসে। টেপার বিল এলাকা লাগা আগুনের আরো ৫ একর বনভূমির গাছপাল পুড়ে গেছে।

খুলনার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. আবু বক্কর জামান, পানি সংকটের কারনে আগুন নিয়ন্ত্রনে আমাদের বেগ পেতে হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত ভাবে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় এক একটি অগ্নিকান্ডের এলাকা নিয়ন্ত্রনে ৪৮ ঘণ্টার অধিক সময় লেগেছে। তারপরও বন বিভাগসহ সকলের সহযোগিতা নিয়ে আগুন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। আগুন লাগার স্থানগুলোর গাছের গোড়া ও লতাপাতার নিচে কোথাও চাপা আগুন রয়েছে কিনা সে বিষয়টি বন বিভাগ আরো এক দিন পর্যবেক্ষণে রাখবে বলেও জানান তিনি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান, সুন্দরবনের র্দূগম দুটি এলাকায় লাগা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এদুটি আগুন লাগার কারন অনুসন্ধন ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) দিপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

(এস/এসপি/মার্চ ২৫, ২০২৫)