স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ফ্যাসিবাদ বিরোধী রক্তঝরা আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক এবং বৈষম্যহীন একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রত্যাশা পূরণের জন্য দেশের জনগণ অপেক্ষায়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক চরিত্র, জনগণের মালিকানার প্রতিফলন হয় নির্বাচিত সংসদ এবং জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে। কিন্তু সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনীতিবিদরা অপাংক্তেয় এবং অনির্বাচিত লোকদেরই দেশ পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি করাই শ্রেয়।

শনিবার (২২ মার্চ) সকালে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিবাদ উত্তর রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব আর মতামত উঠে এসেছে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে, যার মূল ভিত্তিটা রচনা করেছে বিএনপি ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের অনেক আগে ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলো গৃহীত এবং বাস্তবায়ন করা আবশ্যক। জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কার প্রস্তাবগুলোর সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি প্রদানের জন্য একটি নির্বাচিত সংসদই কেবল উপযুক্ত ফোরাম। বিদ্যমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য এ দেশ এবং দেশের মানুষের মূল চালিকা শক্তি। এ ঐক্যকে অক্ষুণ্ন রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। এ ঐক্যের চর্চাকে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত করতে হবে। আমরা এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না যাতে করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য এবং গণঐক্য বিনষ্ট হয় অথবা ফাটল ধরে। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো মহলকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

তিনি বলেন, সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো, জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান এবং জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের নিশ্চয়তা বিধান করা। সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষিত করা।

লিখিত বক্তব্য তিনি আরও বলেন, সংস্কার আগে-নির্বাচন পরে, কিংবা নির্বাচন আগে- সংস্কার পরে এ ধরনের অনাবশ্যক বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া দুটোই একই সঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরি হতেই পারে, নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে যা বাস্তবায়ন করবে।

(ওএস/এএস/মার্চ ২২, ২০২৫)