গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : জনসাধারণকে বঞ্চিত করে ৩৪ লাখ ১০ হাজার ৫শ’১৯ টাকার ৩টি সরকারি প্রকল্প সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে বাস্তবায়নের তথ্য  দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)  অভিযানে বেড়িয়ে এসেছে।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গাজী গোলাম মোস্তফা এসব প্রকল্প নিজের বাড়িতে বাস্তবায়ন করেছেন।

প্রকল্পগুলো হল ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫শ’ ১৯ টাকা ব্যয়ে পানির লবণাক্ত দূরীকরণ প্লান্ট, ২ লাখ টাকার স্ট্রিট লাইট ও লক্ষাধিক টাকার একটি ঘাটলা।

সোমবার (১৭ মার্চ) গিমাডাঙ্গার মধ্যপাড়ায় গাজীবাড়ি জামে মসজিদের বরাদ্দকৃত সরকারি ৫ লাখ টাকাসহ এসি, সোলার প্যানেল ও অন্যান্য সরাঞ্জামাদি আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়ে দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনাকালে অভিযোগসমূহের সত্যতা পায়নি।

পরে ওই মসজিদের ২টি নষ্ট এসির খোঁজ করতে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফার গিমাডাঙ্গা মধ্যপাড়া গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালায় দুদকের ওই টিম।

সেখানে সরকারি ৪টি স্ট্রিট লাইট, পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহ প্রকল্পের রিভার্স অসমোসিস (অরও) প্ল্যান্ট ও একটি ঘাটলার সন্ধান পান টিমের সদস্যরা।

দুর্নীতি দমন কমিশনের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. মশিউর রহমান জানান, ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার পল্লী জনগণকে বঞ্চিত করে গাজী গোলাম মোস্তফার গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫ শত ১৯ টাকা ব্যয়ে রিভার্স অফমোসিস (আরও) প্লান্ট নির্মাণ করে দেন।

এছাড়াও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ২ লাখ টাকা মূল্যের ৪টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও লক্ষাধিক টাকার একটি ঘাটলা ওই বাড়িতে করে দেয়।

দুদকের ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত বাড়িতে ৩ প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে গাজী গোলাম মোস্তফা, নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার ও উপজেলা পিআইও অফিসের প্রকৌশলীরা জড়িত থাকার সত্যতা মিলেছে। জনগণের ক্ষতি সাধন করে ব্যক্তিগত বাড়িতে এগুলো স্থাপন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে। এতে দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। তাই দুদক থেকে তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষটি দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত আকারে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(টিবি/এএস/মার্চ ১৮, ২০২৫)