অগ্নিকান্ডে নিঃস্ব দিনমজুর পেল মাথা গোঁজার ঠাঁই

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : অন্যের জমিতে কাজ করে চালান ৬ সদস্যের সংসার। মামাবাড়ির জায়গায় একটি টিনের ঘর করে ৩ সন্তান, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে বসবাস করতেন এ দিন মজুর। গত ৬ ফেব্রুয়ারি আগুন লেগে মাথা গোঁজার ঠাঁই সহ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। আশ্রয় নেন অন্যের বাড়িতে। এ দিনমজুরের নাম শিপুল মোল্লা (৪৫)। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামে। বাবার নাম মৃত রুস্তম মোল্লা।
এ অবস্থায় নিস্ব পরিবারের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মঈনুল হক। তিনি অগ্নিকান্ডের পর পরিবারটিকে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। সেইসাথে একটি ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। শুক্রবার (১৪ মার্চ) থেকে ঘরের কাজ শুরু হয়। সোমবার (১৭ মার্চ) ঘর নির্মাণ শেষ হয়। তারপরই ঘরটি হস্তান্তর করা হয়। সোমবার থেকেই শিপুলের পরিবার নতুন ঘরে বসবাস করছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সার্বিক তত্ত্ববধানে দিনমজুর পরিবারকে ঘরটি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা ব্যায়ে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় (টিআর) এটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা ।
দিনমজুর শিপুল মোল্লা বলেন, অনেক কষ্ট করে মামাবাড়ির জায়গায় একটি ঘর তৈরি করে স্ত্রী, মা ও ৩ সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতাম। অন্যের জমিতে কাজ করে কিছু আসবাবপত্র কিনেছিলাম। জমিয়ে ছিলাম নগদ ৩৫ হাজার টাকা। কিন্তু গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে আমাদের ঘর, নগদ টাকা, আবসাব সহ সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নতুন একটি ঘর তৈরি করার সামর্থ্য নেই। তাই অন্যের বাড়িতে বসবাস করছিলাম। বিষয়টি ইউএনও স্যার জানতে পেরে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তা দেন। তখন একটি টিনের ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। অবশেষে তিনি আমাদের একটি ঘর করে দিয়েছেন। সোমবার থেকে নতুন ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। তাই প্রশাসনের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল হক বলেন, অগ্নিকান্ডে দিনমজুর শিপুল মোল্লা সর্বস্ব হারিয়েছেন বলে জানতে পারি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে গিয়ে শুকনো খাবার, নগদ কিছু অর্থ সহায়তা করি।
এছাড়া তাদের একটি টিনশেড ঘর তৈরি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেই। সোমবার নতুন ঘরটি শিপুল মোল্লার মায়ের কাছে হস্তান্তর করেছি। উপজেলা প্রশাসন দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য সব সময় মানবিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
(টিবি/এএস/মার্চ ১৮, ২০২৫)