সাতক্ষীরায় মুস্তাফা লুৎফুল্লাহ ও চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরসহ ২৫ জনের নামে মামলা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দোহার গ্রামের কলেজ শিক্ষক ও জালালপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এসএ বিপ্লব কবীরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও সাবেক সাংসদ অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লাহসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ভাই কলেজ শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে রবিবার সাতক্ষীরার আমলী-৩ নং আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক মহিদুল হাসান মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে আগামি ২৩ মার্চের মধ্যে আদালতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও সাবেক সাংসদ অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লাহ ছাড়াও বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি মহিবুল্লাহ মোড়ল, জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি, ডিবি পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজমল হুদা, তালা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর ছিদ্দিকী এ মামলার অন্যতম আসামী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, এসএ বিপ্লব কবীর তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও শালিখা কলেজের গণিতের প্রভাষক ছিলেন। তিনি দোহার গ্রামের মৃত মৃত শেখ শের আলীর ছেলে। জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে বিপ্লব কবীরকে বিভিন্ন সময়ে হত্যার হুমকি দিতো। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাংসদ অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লার নির্দেশে থানায় অভিযোগ নিতেন না। ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই বিকেল চারটায় রবিউল ইসলাম মুক্তির বাড়িতে এক গোপন বৈঠকে বিপ্লবকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর , তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজমল হুদা সাংসদ মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এর সঙ্গে পরামর্শ করে বিপ্লবকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১৮ জুলাই রাত ১২টার দিকে ১১ থেকে ২৫ নং আসামীরা দোহার গ্রামের সফেদ আলীর বাড়ি ঘিরিয়া ফেলে। বাড়ি ছেড়ে সফেদ আলীর ঘরের মধ্যে পালিয়ে থাকা বিপ্লব কবীরকে তারা বের হয়ে আসতে বলে। বিপ্লব দরজা না খোলায় ভেঙে ফেলা হয় দরজা। ভাংচুর করে সফেদ আলী মোড়লের ছয় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়। একপর্যায়ে বিপ্লবেকে মারতে মারতে সেখানে খবর দিয়ে নিয়ে আসা পুলিশের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে চোখ বাঁধা অবস্থায় বিপ্লবকে ইসলামকাটি ব্রীজের পাশে যাত্রী ছাউনির নীচে চোখ বেঁধে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে মামলার সাক্ষীরা দুটি গুলির শব্দ শুনতে পান। ভোরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেঝেতে রক্তাক্ত পায়ে গুলি লাগা বিপ্লবের লাশ দেখতে পান তারা। একপর্যায়ে ১৮ জুলাই বিকেলে সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে বিপ্লবের লাশ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তখন মামলা করার অনুকুল পরিবেশ না থাকায় বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকুলে থাকার কারণে এ মামলা দায়ের করা হয়।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
(আরকে/এএস/মার্চ ১৭, ২০২৫)