রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) শেখ মঈনুল ইসলামের আদেশ অমান্য করে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার  স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নূরে আলম সরোয়ারের নেতৃত্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের তিন বিঘা ঘেরের জমি জবরদখল, ঘেরের বাসা ভাঙচুর ও ছয়জনকে পিটিয়ে জখম করার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে আশাশুনি সদরের জনতা ব্যাংক মোড়ে এ কর্মসুচি পালিত হয়।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জায়াখালি সরকারি পাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সরকার, শিবনাথ সরকার, গঙ্গা দাসী সরকার, ব্রজেন্দ্রনাথ রায় প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, তারকনাথ দাসের শবদলপুর মৌজার এসএ ১৮ খতিয়ানের আট বিঘা ১২ শতক জমির মধ্যে চার বিঘা ছয় শতক জমি শিবনাথ সরকার ও রবীন্দ্রনাথ রায় কিনে নেন। বাকী জমি অর্পিত সম্পত্তি হয়ে যায়। ওই জমির মধ্যে ব্রজেনদ্রনাথ রায় ৬৪ শতক ও শিবনাথ সরকার ৩৯ শতক জমি ডিসিআর নিয়ে ৪৫ বঝর যাবৎ ভোড় দখলে ছিলেন। ২০২২ সাল পর্যন্ত ডিসিআর ছিল। পরবর্তীতে তারা নতুন করে ডিসিআর আবেদন করার পর তাদেরকে না দিয়ে আশাশুনি সদর তৌশিলদার আব্দুল আমিন খান চৌধুরী বিশেষ সুবিধা নিয়ে ব্রজেন্দ্রনাথ রায় ও শিবনাথ সরকারের আবেদনকৃত ডিসিআরের এক একর তিন শতক সম্পত্তি চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি এটিএম নাঈম শরফরাজ ও আশাশুনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নূরে আলম সরোয়ারকে ডিসিআর দেন। বিষয়টি জানতে পেরে শিবনাথ ও ব্রজেন্দ্রনাথ ওই ডিসিআরের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর কাছে আপিল করেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মঈনুল ইসলাম আশাশুনি ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের দেওয়া এটিএম নাঈম শরফরাজ ও আশাশুনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নূরে আলম সরোয়ার এর দেওয়া ডিসিআর স্থগিত(মিস- ১৪/২৫) করেন গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। বিষয়টি জানতে পেরে এটিএম নাঈম শরফরাজ ও আশাশুনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নূরে আলম সরোয়ারের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন সন্ত্রাসী তাদের রেকডীয় ১০ বিঘা ও ৬ বিঘার ভিতরকার এক একর তিন শতক ডিসিআর নেওয়া জমি মাপ জরিপ করে রেকডীয় জমির ভিতর দিয়ে নীল রং এর নেট টানিয়ে জবরদখল করে নেয়। এ সময় ভেঙে দেওয়া হয় তাদের ঘেরের বাসা। লুটপাট করা হয় বাসার ভিতরে থাকা মাছ ধরার জালসহ সরঞ্জাম। এখন তাদের ঘেরের পাশে আটল পেতে তাদেরই জমির মাছ শিকার করছে নাঈম ও নূরে আলম। জমি জবরদখলে প্রতিবাদ করায় রণজিৎ সরকার, শিখা রানী সরকার, বিশ্বজিৎ সরকার, গঙ্গারানী দাসীসহ ছয়জনকে পিটিয়ে জখম করা হয়। হাসপাতালে গেলে বা থানায় মামলা করলে আবারো নতুন করে মারপিট করার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর থেকে শিবনাথ সরকার ও ব্রজেন্দ্রনাথ রায় এর পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।

(আরকে/এএস/মার্চ ১৬, ২০২৫)