শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : একদিকে জরাজীর্ণ ভবন,অন্যদিকে গাদাগাদি করে চলে দুটি দপ্তরের কার্যক্রম। নেই পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা, নিরাপত্তা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হওয়া সত্ত্বেও ঝিনাইদহের ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে বছরের পর বছর ধরে চালানো হচ্ছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। নতুন ভবন নির্মাণের দাবিটি দীর্ঘদিনের হলেও এই এলাকার মানুষের প্রত্যাশা এখনো অপূর্ণ রয়ে গেছে। 

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নাটিমা ইউনিয়ন পরিষদের এই ভবনটি নির্মাণ করা প্রায় ৪০ বছর আগে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ভবনের দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তার, ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল। এসব কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, যা সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একই অবস্থা জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ও ভায়না, শৈলকুপা উপজেলার মনোরহরপুর ও সারুটিয়া এবং মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের। তিনটি মাত্র কক্ষে চলে ইউনিয়ন পরিষদ ও ভূমি অফিসের কার্যক্রম। ফলে কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সেবাগ্রহণকারীদেরও গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কাজ করায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও রয়েছেন আতঙ্কের মধ্যে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জন্যও নেই বসার উপযুক্ত স্থান। এই ৬টি ইউনিয়নে প্রতিদিন গড়ে ১৮’শ থেকে ২ হাজার মানুষ সেবা নিতে আসে। স্থানীয়দের দাবি, দুর্ঘটনা এড়ানোর পাশাপাশি সেবা কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।

তাহেরহুদা গ্রামের ইয়াসিন আলী বলেন, ‘বিল্ডিংটি নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো মেরামত বা নতুন করে নির্মাণ করলে এই এলাকার লোকজন খুবই উপকৃত হবে।’

নাটিমা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সেবা নিতে আসা অখিল মন্ডল বলেন, ‘খুটিনাটি বিভিন্ন কাজে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে আসতে হয়,কিন্তু ভবনটির ভগ্নদশা দেখে মনে হয় যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে। এখানে এসে কাজ মেটানোটাও জীবনের জন্য ঝুঁকি।’

সেবা নিতে আসা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘এই কার্যালয়ে সেবা নিতে এলে ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। তাই সেবা নেওয়ার সময় হওয়ার আগপর্যন্ত কার্যালয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকি। সেবা নেওয়ার জন্য ডাক পড়লেই কেবল ভেতরে যাই।’

পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিতে বিড়ম্বনার কথা স্বীকার করে হরিনাকুন্ডুর ভায়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা তুষার বলেন, ‘পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে অনেক কষ্ট করে নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সব সময় সেবা প্রত্যাশীদের ভীড় লেগেই থাকে। বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কার্যাক্রম চালাতে হয়। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রতই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’

(এসআই/এসপি/মার্চ ১৬, ২০২৫)