একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে অপরিপক্ক রসুন তুলে বিক্রি করছেন কৃষকেরা। বাড়তি লাভের আশা ও বাজার ধরতে একাজ করছেন তারা। এতে উৎপাদন কম হওয়ার শঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। তাঁরা কৃষকদের অপরিপক্ব রসুন তুলতে নিরুৎসাহিত করছেন।

সরেজমিনে গোয়ালন্দ উপজেলার চর কর্ণেশন এলাকায় দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ রসুনখেত। রসুনের গাছের রং এখনো সবুজ। পরিপক্ব হতে এখনো এক মাস বাকি থাকলেও মাঠ থেকে রসুন তোলার ধুম পড়েছে। বাজারে প্রতি মণ রসুন চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পরে রসুন তুললে মণপ্রতি দাম কিছুটা কমে যেতে পারে, সেই ধারণা থেকে কৃষকেরা এখনই অপরিপক্ব অবস্থায় তুলে ফেলছেন। এতে বাজারে দাম বেশি পেলেও তাঁরা আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন না।

সোবহান নামের এক কৃষক বলেন, ‘এখন রসুন তোলা হচ্ছে বাজারে দাম বেশি বলে। আমরা বাজারে একটু বেশি দাম দেখলে তাড়াতাড়ি সেই ফসল তুলে বিক্রি করে দিই। দাম একটু বেশি পেলেও ফলন কম হচ্ছে। এক মাস পর রসুন তুললে ফলন বেশি হবে। এখন এক মণ পেলে, তখন দুই মণ হবে।’

করিম মোল্লা নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘এ বছর বেশি দামে রসুন বীজ কিনতে হয়েছে। সার-কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বেশি পড়েছে। ফলে গত বছরের তুলনায় এবার আবাদের খরচ অনেক বেশি পড়েছে। বিঘাপ্রতি খরচ পড়েছে ৮০ থেকে ১ লাখ টাকা। আর প্রতি বিঘায় রসুন উৎপাদন হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ মণ। গত বছর বিঘাপ্রতি উৎপাদন হয়েছিল ৩০ থেকে ৩৫ মণ করে।’

কৃষক রমজান আলী বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে বীজ, সার, শ্রমিক দিয়ে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে যে রসুন পাচ্ছি, তাতে লোকসানে পড়তে হবে। এবার ফলন কম রসুনের বর্তমান দাম কমে গেলে লোকসান হবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর রাজবাড়ীতে ৩ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৮১৮ টন।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষকেরা বেশি লাভের আশায় অপরিপক্ব রসুন তুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন। যেহেতু আগাম ফসলের দাম বেশি পাওয়া যায়, তাই তাঁরা এটি করছেন। অপরিপক্ব রসুন তুললে ওজনে কম হয়। যেহেতু আরও ২৫ থেকে ৩০ দিন পর রসুন তোলার মূল সময়, তাই কৃষকদের পরিপক্ব হলে রসুন তুলতে বলা হচ্ছে।

(একে/এসপি/মার্চ ১৫, ২০২৫)