অধিকার পেতে ৩টি মামলা
রাজবাড়ীতে প্রবাসীর স্ত্রীকে বিয়ে করে আত্মগোপনে যুবক

বিশেষ প্রতিনিধি : পরকীয়া প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রবাসীর স্ত্রীকে বিয়ে করে পরিবারের পরামর্শে আত্মগোপনে প্রেমিক। সর্বস্ব হারিয়ে আদালতে ৩টি মামলা দায়ের করেছে।
কালুখালী আমলী আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের বড়ইচারা গ্রামের ইসলাম মন্ডলের ছেলে মোহাম্মদ হৃদয় হোসাইনকে আাসামী করে, রাজবাড়ী সদর পারিবারিক জজ আদালতে দেনমোহর ও খোরপোষের দাবীতে মোহাম্মদ হৃদয় হোসাইন ও তার পিতা ইসলাম মন্ডলকে বিবাদী করে নালিশী মামলা এবং রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মোহাম্মদ হৃদয় হোসাইন, তার পিতা ইসলাম মন্ডল, মাতা মোছাঃ মরিয়ম খাতুন ও বোন মোছাঃ লিপি খাতুনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ)/৩০ ধারার মামলাসহ ৩টি মামলা দায়ের করেছে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, গত ২০২১ সালে পারিবারিক ভাবে কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের বড়ইচারা গ্রামের সৌদী প্রবাসীর সাথে বিয়ে হয় ওই নারীর। তাদের দাম্পত্য জীবনে ২টি সন্তনের জন্ম হয়। এরমধ্যে সাংসারিক প্রয়োজনে তার স্বামী সৌদী আরবে কাজের জন্য চলে যায়। এ সুযোগে একই এলাকার হৃদয় হোসাইনের নজর পড়ে প্রবাসীর স্ত্রীর উপর। কারণে অকারণে তার বাড়ীতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে ফুঁসলাতে থাকে। একপর্যায়ে তার প্রেমে পড়ে যায় ওই নারী। নারীকে নিজের করে পেতে গত ৭ জানুয়ারী শরাশরিয়ত মোতাবেক ১০ লাখ টাকা দেনহোহরে হলফনামা ও কাবিন রেজিস্ট্রির মাধ্যমে বিয়ে করে হৃদয়। গত ৮ জানুয়ারী হৃদয়ের বাড়ীর লোকজনের পরামর্শে ৩ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে হৃদয়ের বাড়ী থেকে বউকে ফিরিয়ে নিতে এবং যৌতুকের টাকার জন্য এসে টাকা না পেয়ে মারধর করে তার বাবার বাড়ীতে ফেলে রেখে গেলে গত ২ ফেব্রুয়ারি আাদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, কোন ভাবে তার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। ধীরে ধীরে আমিও তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। এ সুযোগে হৃদয় আমার নিকট থেকে কয়েক দফায় নগদ ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা ও স্বর্ণের ১টি চেইন, ১টি লকেট, ৩টি আংটি কৌশলে হাতিয়ে নেয়। এরপর গত ৭ জানুয়ারি রেজিষ্ট্রি কাবিননামা ও নোটারী পাবলিক এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করে। এরপর তাদের বাড়ীতে নিয়ে আসে।
এসময় হৃদয়ের বাবা, মা, বোনসহ অন্যরা ঘরের ভেতর ফেলে আমার উপর প্রচন্ডভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায়। আমি কোন রকমে প্রাণ নিয়ে ফিরে এসে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। এরা আমার নিকট ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী, শারীরিক নির্যাতন, বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেওয়াসহ খোরপোষ দেওয়া থেকেও বিরত রয়েছে। আমি এলাকায় বিচার না পেয়ে কালুখালী থানায় লিখিত অভিযোগ করি। তাতেও কোন ফল না পেয়ে স্বামী সংসার ফিরে পেতে রাজবাড়ী আদালতে মামলা করেছি। আমি আমার সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।
হৃদয়ের মা মোছাঃ মরিয়ম খাতুন বলেন, আমার ছেলে ছোট। এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। আর সে বিয়ে করলে আমরা অবশ্যই জানতাম। হৃদয় ওই বাড়ীতে যেত কিনা তাও জানিনা। স্ত্রীর দাবী করা মেয়ে আমাদের বাড়ীতে কোন দিনই আসেনি। যেহেতু সে আমাদের বাড়ী আসেনি, মারপিটের কোন ঘটনাও ঘটেনি। হৃদয় কোথায় আছে এখন বলতে পারছি না।
(একে/এসপি/মার্চ ১২, ২০২৫)