সালথায় কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

আবু নাসের হুসাইন, সালথা : গেলো বছর দাম ভালো পাওয়ায় ফরিদপুরের সালথায় কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের আবাদ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বাতাসে দোল খাচ্ছে কালো সোনার সাদা ফুল। আর এই সাদা ফুলের কদমেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন।
দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয়ে থাকে সালথায়। সেই তুলনায় পেঁয়াজের বীজের আবাদ অনেক কম। জেলার বিভিন্ন উপজেলার চাষিদের কাছ থেকে পেঁয়াজ বীজ ক্রয় করে বপন করেন এখানকার চাষিরা।
সালথা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২৫০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় উপজেলায় এ বছরই বাড়ছে পেঁয়াজ বীজের চাষ। এতে ২৮ মেট্রিক টনের মতো বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কালো সোনার সাদা ফুল। আর ফুলে মধু আহরণ করছে মৌমাছি। মৌমাছি কম থাকায় হাত দিয়ে ফুলের পরাগায়ন করছে চাষিরা। আর কিছুদিন পরই চাষিরা বীজ (কালো সোনা) সংগ্রহে করে ঘরে তুলবেন। সেই আশায় অনেকেই শেষ পরিচর্যা করছেন। কালো সোনার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামের চাষি রনো গোপাল সরকার বলেন, প্রতিবছরেই ন্যায় এবছরও দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করেছি। অন্যবারের তুলনায় এবার সার-ওষুধ, শ্রমিক খরচ একটু বেশি হয়েছে। এখনও হাত দিয়ে ফুলের পরাগায়ন করা হচ্ছে। আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে ফলন ভালো হবে। বীজের দামটাও গত বছরের মতো থাকলে আমরা লাভবান হবো। আগামীতে এই চাষ আরো বাড়তে পারে।
গট্টি ইউনিয়নের রাহুতপাড়া গ্রামের চাষি শহীদ খান জানান, এবার রাহুত পাড়া গ্রামে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। গতবারের তুলনায় খরচ একটু বেশি হয়েছে। এবার প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে লাখ টাকার মতো। ভালোভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারলে প্রতি বিঘায় ৪মণ করে বীজ ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সুদীপ বিশ্বাস বলেন, এবছর সালথা উপজেলায় ২৫০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষিরা সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি।
তিনি আরো বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখনও পর্যন্ত পেঁয়াজ চাষ ও কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বীজ উৎপাদন করে চাষিরা অধিক মুনাফা আয় করেন। এ কারণে এই ফসলকে ‘কালো সোনা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
(এএন/এসপি/মার্চ ০৬, ২০২৫)