আইইডিসিআর
এ বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তদের সবাই মারা গেছেন
স্টাফ রিপোর্টার : এ বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৩ জনের সবাই মারা গেছেন বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর। আজ সোমবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
আইইডিসিআর জানায়, আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি পাবনা জেলার। রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। পরে বরিশাল মেডিকেলেও মারা যায় একজন। সবশেষ চলতি সপ্তাহে ফরিদপুর মেডিকেলে আরও একজনের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া তিনজনেরই বয়স ছিল ৪০ এর কম।
নিপাহ ভাইরাসের প্রধান বাহক বাদুড়। বাদুড়ের লালা দিয়ে দূষিত, খেজুরের কাঁচা রসকেই প্রধানত এ রোগের জন্য দায়ী করা হয়। খেজুরের কাঁচা দূষিত রস পানের মাধ্যমে মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। নেশা জাতীয় পানীয় ‘তাড়ি’ নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এরপর আক্রান্ত মানুষের সঙ্গে সুস্থ মানুষের সংস্পর্শে এই রোগ ছড়াতে পারে।
নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ৫-৭ দিন পর থেকে রোগের লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করে। বেশির ভাগ নিপাহ রোগীরই জ্বরের ইতিহাস থাকে। অন্যান্য উপসর্গের মাঝে ঘুমঘুম ভাব, পেশীতে ব্যথা, বমি, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা, এলোমেলো লাগা, ঝিমুনি, বমি, প্রায় অচেতনতার পাশাপাশি মস্তিষ্কে প্রদাহ ও শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা থাকে। যেসব রোগীর মস্তিষ্কে প্রদাহের লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয় আর কাঁচা খেজুরের রস পানের ইতিহাস থাকে, তাদের অবশ্যই নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের সন্দেহের তালিকায় রাখতে হবে।
আইইডিসিআরের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৩ সালে দেশে একজন মায়ের বুকের দুধে নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। পরে ওই মায়ের সন্তানের মৃত্যু হয়। বুকের দুধে নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া সারা বিশ্বে একটি বিরল ঘটনাই বটে। সেই বছর মোট ৫ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এদের সবারই মৃত্যু হয়।
আশঙ্কার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশে গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে যতজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৭১ শতাংশেরই মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কার্যকরী কোনো ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা নেই।
(ওএস/এসপি/মার্চ ০৩, ২০২৫)