মাদারীপুরে দুর্নীতির অভিযোগে ডিসি অফিসের কেরানীর বিরুদ্ধে আদালতে দুদকের চার্জশিট

মাদারীপুর প্রতিনিধি : দুর্নীতির অভিযোগে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কেরানী মিজান ফকিরের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত সোমবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে (জেলা ও দায়রা জজ আদালত) চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযুক্ত আসামী মো. মিজানুর রহমান ফকির (৫৩) মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক। এর আগে তিনি রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। মিজানুর রহমান ফকির মাদারীপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের পাঠককান্দী এলাকার মো. কিনাই ফকিরের ছেলে।
ডিসি অফিসের কর্মচারি মিজান ফকিরকে নিয়ে কয়েক বছর আগে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর দুদক তদন্ত শুরু করে। দীর্ঘ তদন্তের পর দুদক অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পায়।
দুদকের দাখিল করা চার্জশিট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক মিজানুর রহমান ফকিরের বিরুদ্ধে ৫৩ লাখ ২০ হাজার ৭৪৭.৫২ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে আছেন।
এছাড়া আসামি ৫৬ লাখ ৮০ আশি হাজার ৯৭০.০৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপণ রেখে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অসৎ উপায়ে আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছে। যা প্রাথমিকভাবে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান জানান, তদন্তের মাধ্যমে জানা যায়, মিজানুর রহমান গাড়ী কেনা-বেচার ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। গাড়ী কিনে ব্যবসা করেছেন বলে তিনি নিজে তার বক্তব্যে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তার গাড়ী ব্যবসার থেকে ১২ লাখ ৫০ পঞ্চাশ হাজার টাকা আয় করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি একজন সরকারি কর্মচারি হিসেবে গাড়ী ব্যবসা করতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র লাগবে। কিন্তু তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নিয়ম-নীতি ও চাকুরীকালীন বিধি-বিধান মানতে বাধ্য। তিনি সজ্ঞানে জেনে বুঝে তা লঙ্ঘন করেছেন।
মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান আরো জানান, আসামি মিজানুর রহমান ফকির ০.১৪০০ একর সরকারি (ভিপি) সম্পত্তি বরাদ্দ নিয়ে ভোগ-দখলে আছেন। ভিপি বা অর্পিত সম্পত্তি আইন মোতাবেক যে শহরে লীজ গ্রহীতার নিজস্ব বাড়ি বা জায়গা আছে এবং তাকে ওই শহরের অর্পিত সম্পত্তির কোন বাড়ি বা জায়গা লীজ দেওয়া যাবেনা, এই ধরণের পূর্ব লীজ গ্রহীতার লীজ বাতিল করা যাবে। আসামি সজ্ঞানে তা লঙ্ঘন করে নিজে লাভবান হওয়ার জন্য ভিপি সম্পত্তি আইন বহির্ভূত লীজ বরাদ্দ নিয়ে বাউন্ডারি দরজা-ঘর নির্মাণ করে ভোগ-দখলে আছেন। তাই প্রাথমিকভাবে পারিপার্শিক ঘটনা বিশ্লে¬ষণ করে দেখা গেছে, আসামি একজন আইন অমান্যকারী এবং একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে লাভের আশায় ব্যবসা এবং অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করে নানাভাবে দুর্নীতি করেছেন। যা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
(এএসএ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫)