‘লুটপাটের টাকা ফেরত আনতে হবে’

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আবুল খায়ের ভুইয়া বলেছেন, কুখ্যাত হাসিনা ও তার দোসরদের লুন্ঠিত পাচার করা টাকা ফেরৎ আনতে হবে। তাদের টাকা যেসব দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তা উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে। আর তা না হলে এই দেশে থাকা হাসিন বাহিনীর সম্পাদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনুকুলে নিতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে খুনি হাসিনা মানেই ছিল আইন, সে যেটা বলবে সেটাই আইনে পরিণত হতো। এ জন্য দেশে আইনের শাসন ছিল না, ছিল না কোন গনতন্ত্র। হাসিনা ভারতকে কাছে নিয়ে দেশের সব কিছুই বিকিয়ে দিয়েছিল।
সাবেক সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভুইয়া আজ মঙ্গলবার বিকালে ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল মাঠে আয়োজিত এক বিরাট সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাদানকালে এ কথা বলেন।
নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষনা, দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃংলার চরম অবনতি ও ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্ত মোকাবিলার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে।
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড এম এ মজিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, ব্যারিষ্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, মীর রবিউল ইসলাম লাভলু, একে এম ওয়াজিদ আলী, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ঝিনাইদহ বিএনপির এ্যাড মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু, আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, আনোয়রুল ইসলাম বাদশা, সাজেদুর রহমান পপপু, আলমগীর হোসেন আলম, কালীগঞ্জের মাহবুবার রহমান, কোটচাঁদপুরের আব্দুর রাজ্জাক, মহেশপুরের মেহেদী হাসান রণি, হরিণাকুন্ডুর আবুল হাসান মাষ্টার ও শৈলকুপার হুমায়ন বাবর ফিরোজ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সভাটি পরিচালনা করেন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা। আবুল খায়ের ভুইয়া আরো বলেন, জুলাই গণআন্দোলন আকাশ থেকে পড়েনি।
বিএনপির দীর্গ ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের চুড়ান্ত রুপ জুলাই অভ্যুত্থান। বিএনপি নোতারা খুন ও গুম হয়ে দেশে একটা বিস্ফোরন্মুখ পরিবেশ তৈরী করেছিল। সেটাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটে। তিনি বলেন, দেশে নির্বাচনী রোডম্যাপ ও গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে না আসলে জুলাই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে। বিএনপির ৩১ দফা মানুষের মুক্তির সনদ দাবী করে আবুল খায়ের ভুইয়া বলেন, বিএনপি সব দল নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। জননেতা তারেক রহমান এ নিয়ে এখনো কাজ করছেন। তিনি বলেন, যে কেউ দল গঠন করতেই পারে, তাতে আমাদের কিছু যায় আসেনা। কিন্তু সরকারে বসে আবোল তাবোল কথা বলা ঠিক নয়।
আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ব্যার্থ হতে দেব না, কারণ ডক্টর ইউনুস সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। তারেক রহমান সবাইকে নিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চান উল্লেখ করে আবুল খায়ের ভুইয়া বলেন, আইনশৃংখলার উন্নয়ন ও দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে একটি গনতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। এ জন্য সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। সংস্কারের নামে দেশের মানুষ কালক্ষেপন সহ্য করবেন না। বাংলাদেশ বির্নিমানে জিয়া পরিবারের অবদানের কথা স্মরণ করে আবুল খায়ের ভুইয়া বলেন, দেশের গনতন্ত্র রক্ষায় রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জীবন দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। তারেক রহমানকে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
শহীদ জিয়ার স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে জিয়া পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। আবুল খায়ের ভুইয়া ফ্যাসিষ্ট হাসিনার দলের নেতাকর্মীদের দলে না ভেড়ানোর তাগিদ দিয়ে বলেন, আ’লীগ ভোল পাল্টে বিএনপিতে ঢোকার চেষ্টা করছে। তাই তৃণমুল নেতাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। সমাবেশে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, ফ্যাসিষ্ট হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে সামনে ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কিন্তু পেছনে ছিলেন কে ? এই পেছনে থাকা মানুষটিই হচ্ছেন জননেতা তারেক রহমান। তিনি পেছনে থেকে পরিকল্পিত ভাবে এই আন্দোলন পরিচালিত করেছিলেন। তাই যারা এই আন্দোলনে তারেক রহমান ও বিএনপির কোন অবদান নেই বলে অপপ্রচার করছেন, তারা মুলত আন্দোলনের নেপথ্যে থাকা পিতাকেই অস্বীকার করছেন।
(এসআই/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫)