তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : লাইফ কাভারেজ ও সঞ্চয়ের আশায় বীমা করা হয়। বীমা সচল থাকলে মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে গ্রাহক মারা গেলে বীমার সমুদয় টাকা ফেরৎ পান নমিনী। গ্রাহক মারা না গেলে মেয়াদ শেষ হলে লাভ সহ সঞ্চয়ের টাকা দেওয়া হয় গ্রাহককে। এমনই ব্যবস্থা রয়েছে বীমা গ্রহীতাদের ক্ষেত্রে। কিন্তু গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বীমা করে বিপাকে পড়েছেন ৬০ গ্রাহক। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা বীমার টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। বছরের পর বছর বীমা অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। টাকা ফেরত না দিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির গ্রাহকরা।

তারা অভিযোগ করেন, ওই কোম্পানিতে বীমার নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ টাকা ফেরত দিতে টালবহানা ও হয়রানি করছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে অসন্তোষ চরম আকার ধারন করেছে।

প্রতিকার পেতে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) টুঙ্গিপাড়ার প্রেসক্লাবের সামনে হাতে-হাত ধরে বীমা গ্রাহকরা মানববন্ধন কর্মসূচী করেন। এতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৬০ জন ভুক্তভোগী নারী-পুরুষ গ্রাহক অংশ নেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা পূর্ব পাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী নাজমা বেগম বলেন, আমি ১২ বছর মেয়াদি পলিসিতে মাসে ৩ হাজার টাকা করে জমা দিয়েছি। ২০২১ সালে ওই পলিসির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখনো টাকা ফেরত পাইনি। বীমা অফিসে নিয়মিত যাচ্ছি। তারা বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে হয়রানি করছে। এখনো টাকা দিতে পারেনি। মেয়াদ পূর্তির ৩ বছরের বেশি হয়ে গেল। টাকা না পেয়ে বীমা কোম্পানি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। টাকা ফেরত পেতে আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

শামিমা বেগম নামের অন্য ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমার স্বামী ২০১৯ সালে পলিসি করেন। নিয়মিত পলিসি টাকা জমা দিয়ে ২০২১ সালে মারা গেছেন। মৃত্যু পর রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি অফিসে ধরনা দিয়েছি। কিন্তু এখনো মৃতু দাবির টাকা পাইনি।

ভুক্তভোগী মঞ্জিলা বেগম (৫৫) নামের অপর নারী বলেন, খোলার সময় আমাকে বলেছিলো ৩ বছর মেয়াদি পলিসি। এক বছর পলিসির টাকা জমা দেওয়ার পর আমাকে বলা হলো আপনার পলিসির মেয়াদ ১৫ বছর। তখন কেন আমাকে মিথ্যা বলে প্রতারণা করা হলো? আমি এ পলিসি চালাব না। আমি আমার জমাকৃত টাকা ফেরত চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির টুঙ্গিপাড়া শাখার ব্যবস্থাপক রাকিবুজ্জামান বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় এই ইনস্যুরেন্স কোম্পানির দুইটি শাখা রয়েছে। যারা অভিযোগ করেছে তারা অন্য শাখার গ্রাহক। তবে যদি কারো পলিসির মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়, তার টাকা কোম্পানি পরিশোধ করে। যদি টাকা না দেওয়া হয়, তা অনিয়মের মধ্যে পড়ে।

তিনি আরো বলেন, কোন গ্রাহক এক কিস্তি দিয়ে মৃত্যু বরণ করেন তার বীমার সব টাকা দেওয়ার বিধান রয়েছে।

(টিবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫)