সাতক্ষীরায় পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : কর্তব্য শেষে ফেইসবুকে বাই বাই স্টাটাস দিয়ে গলায় গামছা পেচিয়ে অনুপম কুমার ঘোষ নামের এক সিপাহী আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার ভোর সাড়ে তিনটায় সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরের ভাড়া বাসায় এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
মৃত অনুপম কুমার ঘোষ (২৬) বাগেরহাট জেলার চিতলমারি উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আশীষ কুমার ঘোষের ছেলে। তিনি সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন।
অভিযোগ, মাদক সেবনের ফলে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে স্ত্রীর গহনা বিক্রি নিয়ে বিরোধের কারণে অনিমেষ আত্মহত্যা করেছে।
বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মুলঘর গ্রামের চিত্তরঞ্জন রায় জানান, এইচএসসি উত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০২১ সালের মে মাসে তার মেয়ে মেয়ে দীপা রানী রায় এর সাথে চিতলমারি উপজেলারার দুর্গাপুর গ্রামের আশীষ কুমার ঘোষের ছেলে অনুপম ঘোষের হিন্দু ধর্ম মতে বিয়ে হয়। অনুপম সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলো। অনুমপ সস্ত্রীক শহরের রসুলপুরের জনৈক বুলবুল আহম্মেদ এর বাড়ির নীচের তলায় ভাড়া থাকতো। মেয়ের মোবাইলে জামাতার মৃত্যুর খবর পেয়ে সাতক্ষীরায় আসেন।
দীপা রানী রায় জানান, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া দুটোর দিকে পুলিশ লাইনের ভিতর ম্যাগজিন ডিউটি শেষে বাসায় ফেরে তার স্বামী অনুপম। পুলিশ কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শাখাওয়াতের সাথে সে একইসাথে ডিউটি করে। রাতে এসে ভাত খেয়ে সে পাশের ঘরে যেয়ে সিগারেট খেয়ে দরজা দেয়। কিছুক্ষণ পর তাকে ডাক দিলে কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় পুলিশ কর্মকর্তাদের অবহিত করেন।
খবর পেয়ে উপপরিদর্শক শাখাওয়াত এসে দরজা খুলে সিলিং ফ্যান থেকে গলায় গামছা পেচানো ঝুলন্ত অনিমেষকে নামান। রবিবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আক্তার মাহমুদ তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে তার আত্মহত্যার কারণ নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। মৃত্যুর আগে ফেইসবুকে বাই বাই স্টাটাস দেয়।
এদিকে মৃত অনুপমের স্বজনরা জানান, অনুমপ নেশা করতো। সেকারণে সে অনেক টাকা ঋণি হয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে। এ নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ লেগে থাকতো। তারা দু’জনে দুই ঘরে থাকতো। রবিবার ভোর তিনটার দিকে ভাত খাওয়ার পর পর পাশের ঘরে সিগারেট খেয়ে ফেইসবুকে স্টাটাস দিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে নিজের গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আক্তার মাহমুদ জানান, সিপাহী অনুমপম কুমার ঘোষকে সহকারি উপপরিদর্শক জাহিদ হোসেন রবিবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করা যাবে না।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শামিনুল হক সিপাহী অনুমপ কুমার ঘোষের আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
(আরকে/এএস/১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫)