বিনোদন ডেস্ক : রাজধানীর মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে গতকাল ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব। উৎসব স্থগিতের কারণ হিসেবে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বরাতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর নাট্য পর্ষদের আহ্বায়ক ঠান্ডু রায়হান জানান, রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে। পরে সেটি স্থগিত হয়ে যায়।

তবে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানালেন ভিন্ন কথা। উৎসব বন্ধের জন্য নাট্যকর্মীদের একটা অংশই ভূমিকা রেখেছে। এখানে পুলিশ বা সরকার পক্ষের কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ জড়িত নন। আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে ফেসবুক এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে উৎসব বন্ধ হওয়ার আসল কারণ বিস্তারিত তুলে ধরেছেন তিনি।

বরেণ্য চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেছেন, ‘নাট্যোৎসব বন্ধের খবরটা দেখে আমরা কাল সন্ধ্যা থেকেই খোঁজ খবর নেয়া শুরু করি। কারণ সরকার শিল্পকলার মাধ্যমে সারাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছড়িয়ে দিতে উৎসাহ দিচ্ছে, গতকালও শিল্পকলায় তিনটা প্রদর্শনী হলো। আজকেও প্রাচ্যনাটের শো আছে শিল্পকলায়। তাহলে এখানে কেনো পুলিশ উৎসব বন্ধ করতে বলবে?

খোঁজ নিয়ে জানলাম, পুলিশ এইরকম কিছুই বলেনি। কালকে রাতেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে তারা কাউকে উৎসব বন্ধ করতে বলেনি। বরং তারা নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত। তাহলে?

আসল ঘটনা জানিয়ে ফারুকী বলেন, ‘আমাদের দ্রুত অনুসন্ধান থেকে জানা গেলো, নাট্যকর্মীদের মধ্যেই একটা অংশ এই উৎসবের বিরোধিতা করে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছে হল বরাদ্দ বাতিলের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছে বেশ কিছুদিন ধরে। বিক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীদের দাবি, এই উৎসবের আড়ালে জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা হত্যায় বিবৃতি দিয়ে উস্কানি দেয়া কিছু ব্যক্তি বা তাদের গোত্রীয় কিছু মানুষ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা দাবি জানায় জুলাইয়ে তাদের ভুমিকার জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আগে কোনো পূনর্বাসন চলবে না। অবশেষে কালকে মহিলা সমিতি বরাদ্দ বাতিল করে।

কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, বিবৃতিতে তারা এইসব কিছু না বলে কৌশলে প্রথমে পুলিশের কাঁধে দোষ চাপানোর চেষ্টা করলো। এবং বিবৃতির শেষে বললো- মবের কারণে উৎসব বাতিল করতে হলো। তারা তো জানেই কারা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তাদের পরিচয় না লিখে মব বলে চালিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য কি একটা বিশেষ ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করা? বা কেন ঐ বিক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীরা প্রতিবাদ করছে তারা জানে। কিন্তু সেটাও তারা বিবৃতিতে উল্লেখ না করা কি ঐ বিশেষ ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা কিনা সেটা সবাই ভেবে দেখতে পারেন।’

ফারুকী আরও প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘পাশাপাশি আরেকটা প্রশ্নও আসে, জুলাইয়ে তাদের ভুমিকার জন্য জাতির কাছে এখনো কি একবারও ক্ষমার চাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেছে তারা?’

(ওএস/এএস/১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫)