মো: আল-আমিন, শ্রীমঙ্গল : শ্রীমঙ্গলের আকাশজুড়ে আজ রঙের মেলা, ফুলের হাসি আর তারুণ্যের উচ্ছ্বাস। আজ বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গল জেলা পরিষদ মাঠ প্রাঙ্গণ যেন বসন্তের রঙে রাঙিয়ে উঠেছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার আয়োজনে বসন্ত বরণ উৎসব ২০২৫ এর এই বর্ণিল আয়োজন স্থানীয়দের হৃদয়ে এনেছে এক নবীন স্পন্দন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন খান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা অসীম কুমার কর সহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ।

সকাল থেকেই উৎসব প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠেছে উৎসুক মানুষের পদচারণায়। তরুণ-তরুণীদের চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস, পলাশ-শিমুলের রঙে রাঙানো মুখগুলো যেন প্রকৃতির সাথে মিশে গেছে। মাঠ জুড়ে বসেছে বাহারি স্টল—যেখানে স্থানীয় উদ্যোক্তারা তুলে ধরেছেন পিঠাপুলি সহ তাদের অন্যান্য সৃজনশীলতার নজির। ফুলের সুবাসে ভাসছে বাতাস, আর চারদিকে শোনা যাচ্ছে মধুর গানের সুর।
উৎসবের মূল আকর্ষণ ‘ফুলের মেলা’। মাঠ জুড়ে বাহারি ফুলের প্রদর্শনী যেন বসন্তের অপরূপ উপহার। বিভিন্ন জাতের ফুলের চারা ও ফুল বিক্রির স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, “এই উৎসব কেবল বসন্ত বরণ নয়, এটি তারুণ্যের প্রাণের উৎসব। আমরা চেয়েছি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে এসে বসন্তের রঙে রাঙিয়ে উঠুক।”

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও কম ছিল না। উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় গান, নৃত্য, আবৃত্তি—সব মিলিয়ে এক সম্পূর্ণ সাংস্কৃতিক মেলা। সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর ছিল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিশেষ পরিবেশনা। তাদের সুর ও নৃত্য এই বসন্ত উৎসবকে এনে দিল এক ভিন্নমাত্রা।
উৎসবে অংশ নিতে আসা প্রভাষক জলি পাল তাঁর অনুভূতি জানিয়ে বলেন, “বসন্ত মানেই প্রাণের উচ্ছ্বাস। এখানে এসে মনে হচ্ছে প্রকৃতি আর মানুষের মেলবন্ধন একসাথে রঙ তুলির আঁচড়ে এক অনন্য শিল্প তৈরি করেছে। তরুণদের এই উদ্যোগ আমাদের হৃদয়ে আনন্দের দোলা দিয়েছে।”

সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে আলোর ঝলকানিতে উৎসব প্রাঙ্গণ হয়ে উঠে আরও মোহনীয়। বসন্তের এই উৎসব কেবল একটি দিন নয়, এটি প্রমাণ যে শ্রীমঙ্গলের হৃদয়ে তারুণ্য, সংস্কৃতি আর ভালোবাসার মিলন চিরকালীন। বসন্ত এসেছে, এবং তার সাথে এসেছে নতুন আশার গান।

(এএ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫)