মেঘনা নদীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি
র্যাব ও নৌ পুলিশের পৃথক অভিযানে ডাকাত সর্দারসহ ৩ জন গ্রেপ্তার
সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ প্রান্তে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনার অভিযোগে পৃথক অভিযানে ডাকাত সর্দারসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-২ ভৈরব ক্যাম্প ও ভৈরব নৌ থানা পুলিশ।
আজ বুধবার সকালে ডাকাত সর্দার বাচ্চু মিয়া (৫২)কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে তার সহযোগী বিল্লাল মিয়াকে একই জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে নৌ থানা পুলিশ। এদিকে একই মামলার অভিযোগে ৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে পৌর শহরের নাটাল মোড় এলাকা থেকে লোকমান ওরফে পিচ্চি লোকমান (৩৫)কে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৪, সিপিসি-২ ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা।
আটককৃত ডাকাত সর্দার বাচ্চু মিয়া নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মাঝেরচর এলাকার মৃত সাদেক মিয়ার ছেলে। ডাকাত বিল্লাল একই এলাকার মৃত মন্নাফ মিয়ার ছেলে ও লোকমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জের চরচারতলা এলাকার জিল্লু মিয়ার ছেলে।
নৌ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৩ ডিসেম্বর পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকার জার্মান প্রবাসী কাজল মিয়া তার পরিবার নিয়ে সকালে মেঘনা নদী পথে আশুগঞ্জ থানার লালপুর তার শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। ওইদিন বিকালে শ্বশুর বাড়ি থেকে লালপুর ঘাট থেকে মেঘনা নদী দিয়ে ভৈরবে ফেরার পথিমধ্যে বিকাল পৌনে ৪টায় লালপুর ইউনিয়নের চরলালপুর এলাকার কাঠ বাগানের পশ্চিমপাশে মেঘনা নদীতে পৌঁছামাত্রই ডাকাত দলের কবলে পড়ে। এসময় অজ্ঞাতনামা ৮/৯ জনের একটি ডাকাতদল তাদের নৌকা থামিয়ে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে ২টি আইফোন, ৩টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, ১৪ ভরি স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ১৫ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী কাজল মিয়া ভৈরব নৌ থানায় অজ্ঞাতনামা ৮/৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে নৌ থানা পুলিশ বিশেষ অভিযানে ২৮ জানুয়ারি এ ঘটনায় জড়িত নরসিংদী মাঝেরচর এলাকার ডাকাত সাদ্দাম ও শিমুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে পাঠালে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে বুধবার সকালে ডাকাত সর্দার বাচ্চু ও সহযোগী বিল্লালকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি র্যাবের সহযোগিতায় ডাকাত লোকমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে নৌ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে ২৮ জানুয়ারি দুইজনকে ও তাদের দেয়া তথ্যমতে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ডাকাত সর্দার বাচ্চুর দেয়া তথ্যমতে তার সহযোগী ডাকাত জুলহাস ইসলাম বিল্লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটককৃতরা নৌ পথের সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্র। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ নদীপথে নৌকাযোগে ডাকাতি করে আসছে। তাদের নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানা, আশুগঞ্জ থানা, নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায় খুন, ডাকাতি, চুরির একাধিক মামলা রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
(এসএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫)