নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নুরুন্নবী'র বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সাথে অসদাচরণ এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।

এ ঘটনার পর সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক নুরন্নবীকে তদন্ত কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করে নড়াইল জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লাহুড়িয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন উত্তজিত জনতা। পর তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

বৈষম্য বিরাধী ছাত্র আন্দোলনের স্হানীয় নেতাকর্মীরা জানান, 'তারা অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে তিনি তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

এছাড়াও বৈষম্য বিরাধী ছাত্র আন্দোলনের নড়াইল জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মেহেদী আন্দোলনে হামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যাবস্থা না নেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে, তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, "তোর কাছ থেকে আইন শিখতে হবে ? এরপর তিনি আরও রুঢ় ব্যবহার করেন, একপর্যায়ে তিনি দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।"

বিক্ষোভে অংশ নেয়া শরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, 'আমার ভাতিজী তামান্না খানম (১৬) কিছুদিন পূর্বে আত্বহত্যা করেন। এটাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক নুরুন্নবী পরোক্ষভাবে ঘুষ চান। ঘুষ না দেওয়ায় তিনি আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যায় রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আমরা জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করি।

বিক্ষুদ্ধরা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় গ্রামের কয়েকটি চায়ের দোকান থেকে লুডু খেলারত অবস্থায় কিছু মানুষকে তুলে নিয়ে আসেন পুলিশ পরিদর্শক নুরুন্নবী। এরপর তাদের এই মর্মে আদালতে চালান করতে উদ্ধত হন যে, তারা জুয়া খেলছিল। আমরা ব্যাপক খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারি যে, তারা কেউ জুয়া খেলছিলেন না। তাদের নামে ইতিপূর্বেও কোন পুলিশি অভিযোগ নেই। তাদেরকে ছাড়াতে স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা ওই ইন্সপেক্টর এর সঙ্গে কয়েক দফা সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ইন্সপেক্টর তাদের সঙ্গে জঘন্য ব্যবহার করেন। এরপরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে কল করেন। অভিযুক্ত ইন্সপেক্টর তার সঙ্গেও অসদাচারণ করেন। এমনকি অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক প্রকাশ্যে ডক্টর ইউনুসকে গালি দেন বলেও দাবি করেন বিক্ষুব্ধরা।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রবিবার সন্ধ্যায় তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। একপর্যায়ে তিনি আটককৃতদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নড়াইল জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মেহেদী বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক নুরুন্নবী সবসময় অপেশাদার আচরণ করেন, যা অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছিল। এজন্য উত্তেজিত জনতা মিছিল করে।

এ বিষয়ে নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর বলেন, অভিযোগের ভিত্তিত্বে লাহুড়িয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নুরুন্নবীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

(আরএম/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৫)