রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরে পুকুরের মাছ ধরা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িসহ তাঁর সমর্থিত আরো অন্তত ৩০টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রায় আড়ায় ঘণ্টা ধরে ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের ফুসরা গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়।

আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে চলা এ সংঘর্ষে একপক্ষের নেতৃত্ব দেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাশেম খান এবং অপরপক্ষের নেতৃত্ব দেন একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্কাস মাতুব্বর।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কানাইপুরের ফুসরা গ্রামে একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাশেম খান। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্কাস মাতুব্বর। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এলাকার একটি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দুই পক্ষের দুই সমর্থকের মধ্যে প্রথম কথা-কাটাকাটি ও পরে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

সোমবার সকাল ৮টার দিকে বিএনপি নেতা হাশেম খানের সমর্থকরা পার্শ্ববর্তী সালথা থানার গট্টি ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া থেকে কয়েকশ লোক নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাস মাতুব্বরের বাড়িসহ তার সমর্থকদের বাড়িঘরে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এসময় তারা ১০ লক্ষাধিক টাকার গরু-ছাগল লুটপাট করে নিয়ে যান। পরে আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকরা সংঘঠিত হয়ে বিএনপি নেতা হাশেম খার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। এদের মধ্যে তিনজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাস মাতুব্বর বলেন, ‘রবিবার রাতে পুলিশের মধ্যস্থতায় আমরা সংঘর্ষে জড়াবো না বলে কথা দিয়েছিলাম। আমি তা মেনে নিলেও হাসেম খান তা মানেননি। তার সমর্থকেরা অতর্কিতভাবে আজ (সোমবার) সকালে আমার বাড়িসহ আমার সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর, লুট ও দশ লাখ টাকার গরু-ছাগল লুট করে নিয়ে যায়।’ সরেজমিনে গিয়ে আক্কাস মাতুব্বরের বাড়ি সহ তাঁর সমর্থকদের বাড়ী ঘরে হামলার চিহ্ন পাওয়া গেছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে হাসেম খান বলেন, ‘আক্কাসের সমর্থকেরা আমার বাড়িতে হামলা করেছে।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদ উজ্জামান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং র‍্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

(আরআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৫)