ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুর, এলাকাবাসীর হাতে যুবক আটক
রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরে একটি সার্বজনীন কালি মন্দিরের বারান্দায় ঢুকে সরস্বতীপ্রতিমা ভাঙার অভিযোগে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন এলাকাবাসী।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টার দিকে ফরিদপুর শহরের ভাটিলক্ষ্মীপুর এলাকার কালীমন্দিরে এ ঘটনা ঘটে।
আটক যুবকের নাম মো. মিরাজউদ্দীন (৩০)। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বাজেদপুর গ্রামের বাসিন্দা। মিরাজউদ্দীন ফরিদপুর শহরে ইজিবাইক চালান এবং ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।
স্থানীয়রা জানায়, মন্দিরটির অবস্থান একটি সড়কের পাশে। আটককৃত মিরাজউদ্দীন রাত ১১ টার কয়েক মিনিট আগে মন্দিরের সামনে একটি ইজিবাইক এসে দাঁড়ায়। এরপর ওই ইজিবাইকের চালক মন্দিরের বারান্দায় ঢুকে নির্মাণাধীন সরস্বতীপ্রতিমা ধাক্কা দিয়ে ফেলে ভেঙে দেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশে দেন'। ওই একই ব্যক্তি ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ইসকন মন্দিরের সরস্বতীপ্রতিমা ভেঙেছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তখন তাঁকে পাগল বলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিলো বলেও জানায় পুলিশ।
মন্দির কমিটির দেওয়া ২৬ সেকেন্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি মন্দিরের সামনে ইজিবাইক রেখে মন্দিরের বারান্দায় ঢোকেন। রাস্তার দিকে মুখ করে বানিয়ে রাখা প্রতিমা পেছন দিক থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এতে প্রতিমাটি ভেঙে যায়।
আগামী সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠেয় সরস্বতীপূজায় ছয় হাজার টাকা চুক্তিতে একজন মৃৎশিল্পীকে দিয়ে এ প্রতিমা বানানো হচ্ছিল বলে জানান সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী সমর মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘আমরা এই মন্দিরের পাশের একটি ছাত্রাবাসে থাকি। এখানে আমরা অনেক ছাত্র মিলে সরস্বতীপূজা করতে চেয়েছিলাম। অনেক বন্ধুকে নিমন্ত্রণও দিয়েছি। কিন্তু এই প্রতিমা এমন এক সময় ভাঙা হলো যে সংস্কারের সময়ও পাওয়া যাবে না।’
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় আটককৃত যুবকের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে জানিয়ে বলেন, 'প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় মানুষের হাতে আটক হওয়া যুবককে রাতেই পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনায় মন্দির কমিটির সভাপতি বাদী হয়ে মামলা একটি দায়ের করেছেন। মামলা হওয়ার পর সিরাজউদ্দীনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এর আগে, ওই প্রতিমা ভাঙচুরের পর আটককৃত যুবককে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও এবং ওই কালীমন্দিরের সিসি টিভি ক্যামেরায় তাঁর মন্দির ভাঙার ভিডিওসহ একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, ফরিদপুরের আদালত প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় আটককৃত ভিকটিম মো. সিরাজউদ্দীন (৩০)কে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন।
(আরআর/এএস/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২৫)