রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সুন্দরবনে মাছ ধরতে যাওয়া জেলে শহিদ শেখ(৪৫)কে বনদস্যু সবুজ বাহিনীর সদস্যরা অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার রাত আটটার দিকে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের লতাবেড়ী এলাকার আগুনজালা নামীয় অংশ থেকে অপহরণ করা হয় বলে বলে দাবি তার সহযোগীদের। অপহৃত জেলের মুক্তিপণ বাবদ বনদস্যু দলটি ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছে বলেও জানায় ফিরে আসা দুই জেলে।

অপহরণের শিকার শহিদ শেখ শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর গ্রামের ইনছার উদ্দীন শেখের ছেলে।

অপহৃত জেলের সহযোগী জেলে আব্দুর রহিম ও মুজিবর রহমান জানান তারা কদমতলা স্টেশন থেকে মাছ শিকারের পাশ নিয়ে দুই দিন আগে সুন্দরবনে যায়। শুক্রবার রাতে আগুনজালা এলাকার খালে মাছ শিকারের সময় দু’টি নৌকাযোগে আসা ১০/১২ জনের একটি দল তাদের নৌকা থেকে শহিদকে উঠিয়ে নেয়।

এসময় নিজেদের সবুজ বাহিনী পরিচয় দিয়ে তারা মুক্তিপণের জন্য ০১৭৪৪২৩৯৩৩৫ নম্বরটি দিয়ে চলে যায়।

ফিরে আসা দুই জেলে আরও জানায় দু’টি নৌকায় ১০/১২ জন থাকলেও তাদের মধ্যে কয়েকজন উঠিয়ে নেয়া জেলে বলে মনে হয়েছে। সহযোগী জেলেকে উদ্ধারে তারা কোস্টগার্ড ও বনবিভাগসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা প্রার্থনা করেন।

এদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র জানায় শনিবার সকালে ভারতীয় বনরক্ষী ও বিএসএফ সদস্যরা সবুজ বাহিনীর দুই সদস্যকে আটক করেছে। বাংলাদেশের তালপট্রি এলাকা দিয়ে ভারতের হরিখালী খালে প্রবেশের সময় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এসময় আটককৃত দু’জনের সাথে থাকা অন্যরা বনের মধ্যে পালিয়ে যায়। আটক দুইজনের মধ্যে বাহিনী প্রধান সবুজ গাতিদার(৩৮) ও মিকাইল মোল্যা (৪৫) রয়েছেন বলেও সুত্রটির দাবি।

জানা যায় এ দু’জন ৫ আগষ্ট সাতক্ষীরা জেলা কারাগার ভেঙে ফেরার সুযোগে পালিয়ে যায়। তারা যথাক্রমে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সোরা গ্রামের ছিয়ামুদ্দীন মোল্লা ও কালিগঞ্জের ভাঙ্গানমারি গ্রামের নওয়াব আলী গাতিদারের ছেলে।

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মশিউর রহমান জানান বনজীবিদের অপহরণের বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। সাধারণত জেলেরা বনবিভাগকে না জানিয়ে এধরনের ঘটনায় নিজেরা গোপন সমঝোতায় জিম্মি জেলেকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবীর জানান, জেলে অপহরণের বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। তবু খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।

(আরকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২৫)