২০৫০ সালকে টার্গেট করে ‘সেইভ ফুড সিকিউরিটি’র প্লান তৈরীর পরিকল্পনা
ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইন্সস্টিউটে মতবিনিময় সভায় কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কৃষিই হবে অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ইন্সস্টিউটের মিলনায়তনে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বিএসআরআই এর উদ্যোগে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সভায় পাবনা ও বগুড়া অঞ্চলের কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১৮টি দপ্তর এবং সুগারক্রপের বিভিন্ন পর্যায়ের কৃষিবিদ, কর্মকর্তা, কর্মচারী, কৃষক ও খামারিরা অংশগ্রহন করেন।
কৃষি সচিব বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে আমরা চিন্তা করেছি কৃষি ক্ষেত্রে আমাদের একটি মাইলষ্টোন দরকার। যেমন শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষা কমিশন, নদী রক্ষা ক্ষেত্রে নদী রক্ষা কমিশন গঠন হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কৃষির ক্ষেত্রে সেরকম কিছু হয়নি। আমাদের কমিশন দরকার নেই, যেহেতু সরকার এখনও করেননি। আমরা ২০৫০ সালকে টার্গেট করেছি। সেসময়ে কি পরিমাণ জনসংখ্যা দেশে তৈরী হবে। সেটিকে বিবেচনা করে কি পরিমাণ মানুষ ও অন্যান্য প্রাণির জন্য খাবারের প্রয়োজন হবে সেটা নির্ধারণ করতে হবে। সেসময়ে যদি ২২ কোটি জনসংখ্যা হয়, তাহলে এই মানুষগুলোকে আমরা কিভাবে খাদ্যের নিরাপত্তা দিব। এজন্য ‘সেইভ ফুড সিকিউরিটি’র প্লান তৈরীর পরিকল্পনা করতে চাই। এটাকে আমরা মিশন ‘টোয়েন্টি ফিকটি’ প্লান বলতে পারি। এগুলোকে মাথায় রেখে আমরা প্রজেকশন করতে চাই। কৃষির সকল প্রকার ইস্যু ২০৫০ এর পরিকল্পনায় অর্ন্তভূক্ত থাকবে। এসময় তিনি কৃষির মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারিদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ চালু করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইন্সস্টিউটের মাহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সমন্বয়ক ও পদকপ্রাপ্ত কৃষক আলহাজ্ব শাজাহান আলী বাদশা ওরফে পেঁপে বাদশা কৃষক ও খামারিদের বহুবিধ বৈষম্যের রাহু গ্রাস থেকে উত্তোরণের জন্য ১৬ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেন। পেঁপে বাদশা বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কৃষি ও ভুমি সংস্কারের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কৃষক ও ভোক্তা সাধারণের স্বার্থে কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ কৃষি আমাদের খাদ্য, বস্ত্রসহ ওষুধের কাঁচমালের জোগান দেয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচনেও কৃষির অবদান রয়েছে।
পদকপ্রাপ্ত কৃষক সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ বলেন, কৃষিখাতকে শক্তিশালী করতে ভর্তুকি মূলে কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। ফসলের ন্যুনতম সহায়ত মূল্য, তামাদি ও মামলায় জড়িত কৃষকদের কৃষিঋণ মওকুফ, বিদ্যুত বিল ও ডিজেলের মূল্য না বাড়ানো, ষাটোর্দ্ধ কৃষকদের জন্য পেনশন চালু করার দাবি জানান তিনি।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু জুবাইর হোসেন বাবলু, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছাইফুল আলম, যুগ্ম সচিব ড. লুৎফর রহমান, যুগ্ম সচিব দীপংকর বিশ্বাস, উপ-সচিব মনিরুজ্জামান, উপ-সচিব মাকছুদুল ইসলামসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
(এসকেকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৫)