রূপক মুখার্জি, নড়াইল : মিলন কুরি শুধুমাত্র বাতসা বিক্রি করে লাখপতি বনে গেছেন। বংশ পরম্পরায় বাতসা তৈরীর কাজ করেন তিনি। নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের রতডাঙ্গা গ্রামে তাদের বাড়ি। প্রতিকেজি বাতসা ১৭০ টাকা পাইকারী দরে বিক্রি করেন মিলন, যা বাজারে বিক্রি হয় ২০০ টাকা কেজি দরে। আর এই বাতসা বিক্রি করে ইতিমধ্যে  লাখোপতি বনে গেছে মিলন কুরি। 

নড়াইলের জনপ্রিয় এই মিষ্টি বাতসা জেলা শহরে একাই সরবরাহ করে থাকেন। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রসাদ হিসাবে এই বাতসার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা অনুষ্ঠানে এটা অধিক প্রচলন রয়েছে। জেলা জুড়ে তার এই বাতসার খ্যাতি থাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার বাতসা।

আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিনে হয় কথা হয় মিলন কুরির সাথে। তিনি বলেন, 'আমার তৈরি বাতসা সারা নড়াইল জেলায় বিক্রি হয়। আমি এটা তৈরি করে পাইকারি দরে বিক্রি করি। ১ কেজি ১৭০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। এ বাতসা অনেক সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর অনেক চাহিদা। ঠাকুর দাদার আমল থেকে আমরা বাতসা তৈরী কাজ করি। এ ব্যবসাটা দাদুর ছিল৷ দাদুর পর বাবা ধরে নিল। এখন আমি করতেছি। দাদুর নাম যুগোল কুড়ি। ওনার অনেক নাম ছিল। তার হাতের বাতসা খেতে অনেক দুর-দুরান্ত থেকে লোক আসতো।’

আগে বাতসা তৈরীতে সাদা চিনি ব্যবহার করতাম না৷ সে সময় গুড় আসতো খুলনা-যশোর থেকে। সেই গুড় হতে রস বের করে, চিনি বানিয়ে তা দিয়ে বাতসা তৈরী করতাম। এখন আখের গুড় ফরিদপুর জেলার বেড়ামারা হতে আসে।

সরেজমিনে কথা বলার সময় মিলন কুরি বাতসা তৈরীর প্রক্রিয়া সম্পর্কে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'বাতসা তৈরী করতে হলে আপনাকে আনতে হবে বেকিং ট্রে ও ছিদ্র যুক্ত একটি পাত্র। প্রথমে বাতসা তৈরীর জন্য চিনি, গুড় ও জল দিয়ে চুলাই দিয়ে জ্বালিয়ে ফোটাতে হবে। চিনি সম্পূর্ণ গুলে গেলে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। এরপর মিশ্রণটি সম্পূর্ণ ফুটে ঘন হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলতে হবে। এরপর মিশ্রণটি দুই আঙুলের মধ্য দিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে মিশ্রণটি জলের মতো তৈরি হচ্ছে কি না। যদি সে রকম হয়, তবে মিশ্রণটি বাতসা তৈরীর উপযোগী। এর পর ছিদ্র যুক্ত পাত্রে মিশ্রনটি নিয়ে বাতসার মত ছোট ছোট করে ফেলতে হবে। সম্পূর্ণ প্রতিক্রিয়াটি ২০ মিনিটে শেষ হয়ে যাবে।

(আরএম/এসপি/জানুয়ারি ৩১, ২০২৫)