শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে
বরিশালের ১৬ রুটে চলছে বাস ধর্মঘট, চরম ভোগান্তি
আঞ্চলিক প্রতিনধি, বরিশাল : নগরীর রূপাতলীতে বাস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও শ্রমিকদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিসহ শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট শুরু করেছে বাস শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। এতে করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের ১৬ রুটের যান চলাচল।
পাশাপাশি শুধু বাসই নয় দূরপাল্লায় যাত্রী নিতে চাওয়া থ্রি-হুইলারগুলোও আটকে দিচ্ছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এতে করে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন যাত্রীরা। বুধবার ভোর থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এতে করে বরিশাল-খুলনা, পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, ভান্ডারিয়া, ঝালকাঠি, নলছিটি, বেতাগী, বরগুনা, লেবুখালি, বাউফল, দশমিনা, পটুয়াখালি, আমতলী, কুয়াকাটা ও ভোলা রুটের চলাচলকারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
রূপাতলী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, শ্রমিকদের কাজ ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য বরিশাল বিভাগের ১১টি বাস মালিক সমিতি এবং শ্রমিক ইউনিয়নের ঐক্য পরিষদ মিলে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। এতে করে ১৬টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, শ্রমিকরা আজীবন মার খেয়ে যাচ্ছেন আর সকলকে ছাড় দিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার বিকেলে বিনাকারনে আমাদের ওপর বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলা চালিয়েছে। শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দিবে তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু তাদের আইডি কার্ড দেখিয়ে পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়-স্বজনেরও হাফ ভাড়া দিবে সেটাও কি মেনে নিতে হবে।
আবুল কালাম বলেন, ছাত্ররা বুধবার দলবদ্ধভাবে এসে আমাদের ওপর যেভাবে হামলা করেছে তাতে আমরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। আমাদের পিটিয়ে মেরে ফেললেও কেউ দেখবে না। এসব ভয় থেকেই শ্রমিকরা আর সড়কে গাড়ি চালাতে চাচ্ছেন না।
রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঝালকাঠি রুটের একটি বাসে বিএম কলেজের এক ছাত্রীর হাফভাড়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিচার চাইলে শিক্ষার্থীরা ঝালকাঠি মালিক সমিতির কাছে চাইতে পারতো। কিন্তু রূপাতলীতে বিক্ষোভ করে বাস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকরা ভয়ে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে চাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে ঝালকাঠি রুটে এক ছাত্রীর সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগ তুলে রূপাতলী বাস টার্মিনালে বিক্ষোভ ও অবরোধ করে সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময়ে শ্রমিকদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থানকারী বাস ভাঙচুর করে এবং টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। তারা অসৌজন্য আচরণকারী শ্রমিক, হামলাকারী শ্রমিকদের গ্রেপ্তারসহ আট দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সড়ক ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে রাত বারোটার দিকে কর্মবিরতির ঘোষণা করেন পরিবহন শ্রমিকরা।
(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ২৯, ২০২৫)