গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : কারাগারে অপরাধীদের বন্দী করে রাখা হয়। অপরাধের ধরণ অনুযায়ী তাদের কারাবাসের সময় নির্ধারণ করে দেয় আদালত। কারাগারে তাদের নিরাপদ রাখতে  ও আলোর পথ দেখাতে নেওয়া হয়েছে  কল্যাণমুখী উদ্যোগ। এরমধ্যে রয়েছে সেলাই প্রশিক্ষণ, পাঠাগার স্থাপন, মাদকাশক্তি নিরাময়, অপরাধ প্রবনতা হ্রাস, খেলাধূলা, সবজি, ফল-চাষ, ভাল কাজে উদ্বুদ্ধ করণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির মতো কর্মকান্ড।

অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসনের প্রত্যয়ে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে স্থাপিত ‘ইহসান বেকারীতে’ রুটি, বিস্কুট, কুকিজ ও কেক সহ বেকারি সামগ্রী তৈরী করা হচ্ছে। এখানে বেকারী পণ্য তৈরীতে এক্সপার্ট মোঃ মহিদুল ইসলামের কাছে কারাবন্দীরা কাজ শিখছেন। উৎপাদিত পণ্য থেকে আয়ের একটি অংশ তারা পাবেন।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার আল আমিন মোল্লা বলেন, অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি, প্রবেশন অফিসারের কার্যালয় গোপালগঞ্জের তত্ত্ববধানে এবং জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় এ বেকারী স্থাপন করা হয়েছে । এখানে আধুনিক ওভেন, মিক্সার মেসিন সহ প্রয়োজনীয় সব মেসিনে পাউরুটি, কেক, বিস্কুট, কুকিজ সহ মানসম্পন্ন বেকারী সামগ্রী প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ বেকারীতে উৎপাদিত পন্য মানবদেহের জন্য নিরাপদ। খেতে মজাদার ও মুখরোচক।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ হারুন অর রশীদ বলেন, কারাবন্দীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয় বৃদ্ধির জন্য কারগারে আমরা বেকারী স্থাপন করে দিয়েছি। কারাবন্দীরা বেকারি সামগ্রী উৎপাদনের কাজ শিখছেন । পাশাপাশি উৎপাদিত পাউরুটি, বিস্কুট, কুকিজ, কেক গোপালগঞ্জে বাজারজাত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখান থেকে আয়ের একটি অংশ তারা পাবেন।কাজ শিখে কারাবন্দীরা দক্ষতা বৃদ্ধি করবেন। কারাগার থেকে বের হয়ে তারা বেকারি স্থাপন বা বেকারিতে কাজ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। এতে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারগার থেকে বের হয়ে তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবনতা হ্রাস পাবে। পরিবার পরিজনের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এ বেকারিতে উৎপাদিত পণ্যে কোন প্রকার ক্ষতিকারক উপকরণ ব্যবহার করা হয় না। মান নিয়ন্ত্রণ করে সবসময় গুনগত মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করা হয়। এ কারাগার বোকরিতে উৎপাদিত পণ্য গোপালগঞ্জবাসীর কাছে দ্রুত সমাদৃত হবে। পাশাপাশি কারাবন্দীরা এখানে কাজ করে অর্থ উপার্জন এবং দক্ষতা আয়ত্ত করবেন। এতে কারাগারে বেকারি স্থাপনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সফল হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান ফিতা কেটে কারা অভ্যন্তরে এ বেকারির উদ্বোধন করেন।

(এমএস/এএস/জানুয়ারি ২৫, ২০২৫)